রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি না পেয়ে দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
গত ২৭ মার্চ মন্ত্রণালয় সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলুকে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—রাজশাহী জেলা প্রশাসক, নাটোর বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং নওগাঁ বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সমশের আলী।
আরও পড়ুন: ধানক্ষেতে দুই কৃষকের কীটনাশক পান, আরও একজনের মৃত্যু
বিজ্ঞপ্তিতে দুই কৃষকের মৃত্যুর কারণ এবং সেচের পানি সময়মতো না পাওয়ার কারণ উদঘাটন করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনা তদন্তের জন্য বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান বিএমডি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাজিরুল ইসলাম। তিনি কমিটির অপর দুই সদস্যকে নিয়ে গত ২৭ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন।
নাজিরুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। জমিতে পানি না দেওয়াকে কেন্দ্র করেই বিষ পান করে দুই কৃষক মারা গেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
গত বুধবার ঈশ্বরীপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ২ নম্বর গভীর নলকূপের ধানক্ষেতের পাশে কীটনাশক পান করেন কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও রবি মারান্ড। ওই দিনই কৃষক অভিনাথ মারা যান। এরপর শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাত ৮টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি। এ ঘটনার পর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা করা হয়। তবে এখনও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা বলে দাবি করা হয়েছে। সমাবেশের বক্তারা কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি হত্যার প্রতিবাদ জানান এবং অভিযুক্ত গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনকে দ্রুত গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার ও ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তারা।