রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির গণসমাবেশের স্থান বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দলটির নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁরা ট্রলার ও পণ্যবাহী নৌযানে বরিশাল শহরে আসতে থাকেন। পরে হেঁটে দলে দলে রওনা দেন সমাবেশস্থল অভিমুখে। এ সময় তাঁদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড।
শুক্রবার রাত ১১টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, যেসব নেতা–কর্মী আগে এসেছেন তাঁদের কেউ কেউ রাতের খাবার খাচ্ছেন। অনেকে আবার শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্লোগান তুলে সমাবেশে আসতে থাকা ছোট ছোট দলকে স্বাগত জানাতে তাঁরাও স্লোগান তুলছিলেন। ফলে রাতেই শনিবারের সমাবেশের আবহ তৈরি হয় এ উদ্যানে। আগত নেতা–কর্মীদের মধ্যে আছেন নারীরাও। সব মিলিয়ে যেন উৎসবের আমেজ বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অবস্থানরত নেতা–কর্মীদের মধ্যে।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে আসা বিএনপির কর্মী হাসানুর রহমানের সঙ্গে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় সমাবেশস্থলে কথা হয়। তিনি বলেন, লঞ্চ বন্ধ থাকায় স্থানীয় নেতা–কর্মীরা একত্রে আসতে পারেননি। বিভিন্ন উপায়ে ট্রলারে করে বরিশাল পৌঁছেছেন তাঁরা। এরপর নগরের মধ্যে একত্র হয়ে মিছিল করে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। এভাবে পিরোজপুর, বরগুনাসহ বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসেন।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা থেকে এসেছেন বিএনপির কর্মী ফৌজিয়া আক্তার। তাঁর সঙ্গে আছেন আরও ছয় নারী। ফৌজিয়া বলেন, তাঁরা বৃহস্পতিবার রাতেই সমাবেশস্থলে এসেছেন। মাঠেই রাত কাটিয়েছেন। শুক্রবার রাতেও মাঠে থাকবেন।
হেমন্তের শুরুতে বরিশালে এখন শীতের আবহ। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মীরা খোলা মাঠে থাকতে গিয়ে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়ছেন। বরগুনা থেকে আসা সাইদুর রহমান বলেন, হোটেলে কক্ষ না পেয়ে মাঠেই থাকতে হচ্ছে। রাতে মাঠে বেশ ঠান্ডা লাগে। কিন্তু কিছু করার নেই।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান বলেন, বরিশাল বিভাগের জেলা–উপজেলাগুলো নদীবেষ্টিত। তাই নেতা-কর্মীরা শুক্রবার রাতের মধ্যেই ট্রলারে বরিশালে পৌঁছাবেন বলে আশা করছেন। তাঁর ধারণা, মহানগর ও সদর উপজেলাসহ ঝালকাঠীর হাজার হাজার নেতা-কর্মী শনিবার দুপুরের মধ্যে সমাবেশের মাঠে পৌঁছাবেন। সব বাধা পেরিয়ে সমাবেশে লাখো মানুষ উপস্থিত হবে। হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে মানুষ এই সরকারকে চূড়ান্ত অনাস্থা জানাবেন।