২৩ জুলাই (শনিবার) রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে বঙ্গোগসাগরে ৬৫ দিনের মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞা। সমুদ্র উপকূলের জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য। শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের মোংলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সমুদ্রগামী জেলেরা মাছ ধরার জন্য নৌকা, ট্রলার ও জাল প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মৎস্য অধিদফতর। সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় মাছের ডিম পাড়া, বংশ বিস্তার ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় উঠে যাবে এ নিষেধাজ্ঞা। ফলে জেলেরা রাত থেকেই সমুদ্রে মাছ শিকার করতে পারবেন।
মোংলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় তিন সহস্রাধিক সমুদ্রগামী জেলে সাগরে যাওয়া প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা দুই হাজার ৬৪০ জন।
জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জালাল শেখ জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শনিবার রাত ১২টায়। দীর্ঘদিন এসব জেলেদের জাল, নৌকা ও ট্রলার ঘাটে পড়ে থেকে প্রায় নষ্টের উপক্রম হয়েছে। সেগুলো তারা এখন মেরামত ও ধুয়ে-মুছে সাগরে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের জেলে রশিদ হাওলাদার, সোবহান মাতুব্বর, জাহিদ ব্যাপারী; চিলা ইউনিয়নের কাটাখালীর আবজাল হোসেন এবং জয়মনির ওদিয়ার রহমান বলেন, ‘৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আমরা খুব কষ্টে জীবনযাপন করেছি। অবরোধ চলাকালে দুই দফায় ৫৬ ও ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা ছিল। পেয়েছি মাত্র একবার, ৫৬ কেজি। দ্বিতীয় দফার ৩০ কেজি কেউই এখন পর্যন্ত পাইনি। প্রথম দফায়ও সবাই পায়নি, কেউ কেউ পেয়েছেন। আবার দুই দফার কোনোটিই পাননি বেশির ভাগ জেলে। তারপরও অবরোধ শেষ হওয়ায় আমরা সবকিছু নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। জাল, নৌকা ও ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে অনেক খরচ পড়ে যায়। জ্বালানি তেলের দামও বেড়েছে।’
নিজেদের সংকটের কথা জানিয়ে তারা আরও বলেন, ‘ভালো মাছ হলে খরচ বাদে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পারবো। এমনিতেই তেমন কোনও সাহায্য সহযোগিতা পাই না, ধার-দেনা ও ঋণে জর্জরিত আমরা। এ অবস্থায় মাছ না পেলে না খেয়েই মরতে হবে আমাদের।’