গত তিন দিন বৃষ্টি না হওয়ার পাহাড়ের ঢলের পানি কমে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের প্লাবিত এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। হাওর ও নদীর পানি কমছে। সীমান্ত এলাকার পাটলাই, যাদুকাটা, চলতি চেলা, সোনালি চেলা ও খাসিয়া মারা নদীর পাহাড়ি ঢলের পানিপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে।
সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চার দিনে দেড়-দুই হাত পানি কমেছে। হাওরে পানি বেশি হলে আমরা ২২ সালের ভয়াবহ বন্যার কথা ভেবে আতঙ্কিত হই। আজ চার দিন ধরে কড়া রোদ উঠেছে, তাই এখন দুশ্চিন্তা কেটেছে।’
একই গ্রামের ফারুক মিয়া বলেন, ‘দুই-আড়াই মাস হাওরে পানি ছিল না। ১০-১৫ দিন হয় পানি আইছে। এখন আমরার সুবিধা হইসে, নৌকা দিয়ে বাজার-হাটে যেতে পারবো।’
গোয়াচূরা গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, ‘পানি বাড়তির সময় বাড়ির ৫-৬ হাত লামাত আছিল, অখন আর নামছে।’
শহরের এইচ এমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদ বলেন, ‘শহরের চিপাচাপায় হাওরে ভিডিও করে কেউ কেউ ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। এভাবে গ্রামের মানুষকে আরও আতঙ্কে ফেলা হয়। কারণ এখনও হাওর পুরোপুরি পানিতে ভরে ওঠেনি। কিছু মানুষ হাওরে ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে মানুষকে ভয়ভীতি মধ্যে ফেলে দেয়।’
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘হাওরের পানি সড়ক থেকে দুই-তিন হাত নিচে। কোনও ঘরবাড়িতে পানি ওঠেনি। চার দিন ধরে কড়া রোদ। হাওরগুলো এখনও পুরোপুরি পানিতে ভরেনি। আপাতত বন্যা হওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি নেই।’
এদিকে, জেলার ২৬টি নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখন ছোট-বড় ১৩৭টি হাওর স্বাভাবিক পানিতে ভরে উঠছে। জেলার হাওরগুলো প্রতিবছর জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সাত মাস পানিতে ডুবে থাকে। এটি হাওরের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘হাওর ও নদীর পানি কমছে। সীমান্তের নদীগুলোর পাহাড়ি ঢলের পানিপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে।’