কক্সবাজারে মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে এখনও অব্যাহত রয়েছে। কখনও ভারী, আবার কখনও মাঝারি মানের বৃষ্টিতে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৫টি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে ২ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং অপর ৮ জন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) মধ্যরাত থেকে বুধবার (১৯ জুন) সকাল পর্যন্ত উখিয়ার ১, ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান।
এর মধ্যে ১ নম্বর ক্যাম্পে একজন, ৮ নম্বর ক্যাম্পে একজন, ৯ নম্বর ক্যাম্পে ৩ জন, ১০ নম্বর ক্যাম্পে ৪ জন ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
১০ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন ব্লক ১০-এর আবুল কালামের ছেলে আবু মেহের (২৫), লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫৭), মতিউর রহমানের মেয়ে সলিমা খাতুন (৪২), শরিফ হোসেনের মেয়ে জয়নব বিবি (১৯)।
৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহতরা হলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকার আলী জহুরের ছেলে হোসেন আহমেদ (৫০), আই-৪ ব্লকের আলী জোহারের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮) ও আই-৯ ব্লকের মো. জামালের ছেলে মো. সালমান (৩)।
৮ নম্বর ক্যাম্পে বি-৮২ ব্লকের মো. হারেজের ছেলে মো. হারেজ (৪) মারা যান।
১৪ নম্বর ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় নিহত হন উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আব্দুল করিম (১২)। আবদুল করিম থাইংখালী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
এ ছাড়া ১ নম্বর ক্যাম্পের এফ-৫ ব্লকের সুলতান আহমদের মেয়ে পুতনী বেগমও (৩৪) পাহাড়ধসে নিহত হন।
আরআরআরসি মিজানুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ৬টায় ১০ নম্বর ক্যাম্পের বক্ল-সি/৩-তে পাহাড়ধসে মাটিচাপা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টায় ৯ নম্বর ক্যাম্পের আই-৪-এ পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। ওখানে উদ্ধার করা হয় ৩ জনের মরদেহ। এদিন ভোর ৪টার দিকে ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড়ধসে মারা যায় আর ২ জন। একই সময়ে ১ নম্বর ক্যাম্পে পাহাড়ধসে মারা যান একজন। এ ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, নিহতদের ২ জন স্থানীয় বাসিন্দা। এর মধ্যে ৯ নম্বর ক্যাম্পে নিহত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হোসেন আহমেদ বিভিন্ন কারণে সেখানে অবস্থান করতেন। এ ছাড়া নিহত আব্দুল করিমের বাড়ি ১৪ নম্বর ক্যাম্পের পাশেই।
ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে জানিয়ে মিজানুর রহমান জানান, ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারী পাঁচশ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও কেউ ঝুঁকিপূর্ণ আছে কিনা দেখা হচ্ছে। তাদেরও সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৯ জনের মৃত্যু