সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন পারভীন আক্তার। অসুস্থ স্বামী ও সন্তানের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেয়ার জন্য প্রতিদিনই রিকশা চালান এই নারী। কিন্তু বিধি-নিষেধের কারণে পথে পথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে পড়তে হয় তাকে।
বুধবার (৭ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে পারভীন আক্তার এমন অভিযোগ করেন।পারভীন বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। প্রায় এক বছর ধরে আমি রিকশা চালাচ্ছি। আমার আয়ে সংসারে রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়।
তিনি বলেন, ‘এই করোনার মধ্যে সরকার লকডাউন দিয়েছে। আমরা কীভাবে খাব, কীভাবে চলব? রাস্তা-ঘাটে পুলিশ। তারা পথে পথে আমাদের হয়রানি করে। রিকশা উল্টাইয়ে থুয়ে দেয়। এখন তো আমার না খেয়ে মরার দশা।
পারভীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের একটা আবেদন। তিনি যে এত টাকা-পয়সা অনুদান দেন, কই আজ পর্যন্ত তো আমরা একটা পয়সাও পাইনি। আমরা আজ পর্যন্ত কিছুই পাইনি।তিনি আরও বলেন, ‘অনেক এলাকায় কমিশনার আছে, অনেক এলাকায় মতব্বর আছে। কিন্তু থাকলে কী হবে, আমাদের তো তারা দেয়নি। আমাদের মোবাইল নম্বর আছে। আমাদের বাড়ির ঠিকানা আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা এক মুঠো চালও পাইনি।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের নবীনবাগে ভাড়া বাসায় থাকেন পারভীন। দুই ছেলে-মেয়ে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে তার সংসার। স্বামীর মেরুদণ্ডের হাড়ে সমস্যা। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ টাকা মালিককে রিকশার ভাড়া দিতে হয়। এরপর যা থাকে তা দিয়ে সংসার চলে পারভীনের।
পারভীন বলেন, ‘এখন বেলা ১টা বাজে। ১০০ টাকা ভাড়া মারছি। তাহলে আমি কীভাবে চলব পোলাপান নিয়ে? কীভাবে ঘর ভাড়া দেব? বাড়িওয়ালা তো লকডাউন মানবে না। টাকা দিতে না পারলে, সে ঘরে তালা মারবে। তিন হাজার টাকা ঘর ভাড়া দিতে হয়।
তিনি বলেন, ‘এ সরকার জনগণের বিপদ ডেকে এনেছে। পাবলিক যদি রাস্তায় বের হতে না পারে, আমরা কাকে নিয়ে খ্যাপ মারব। পাবলিক যদি রিকশায় না ওঠে, আমরা কী চিড়িয়াখানার বাঘ-ভাল্লুককে ভাড়া উঠামু?