লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমন উৎপাদন, ফলন ও দামে খুশি চাষিরা
বাংলাদেশ

লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমন উৎপাদন, ফলন ও দামে খুশি চাষিরা

নীলফামারীতে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমনের উৎপাদন। চলতি মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। এবার ফলনও হয়েছে ভালো। গত বছরের তুলনায় এবার ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা।

সরেজমিনে সদরের কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের পাটকামুরি ও নিউবাবু পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে কৃষকরা পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত। কেউ কাটা ধান আঁটি বাঁধছেন। কেউ মাথায় করে আঁটি বাড়ি নিচ্ছেন। আবার অনেকে ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছেন। কেউ কেউ বাজারে ধান বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষকরা বলছেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিঘায় ১৮-২০ মণ ধান ঘরে তুলছেন কৃষকরা। এখন বাড়িতে বাড়িতে চলছে মাড়াইয়ের কাজ। গত দুই বছরের চেয়ে দাম ও ফলন বেশি পাওয়ায় খুশি তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, নীলফামারীতে এবার আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ১৩ হাজার ১৭২ হেক্টর। চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ২০৮ হেক্টর। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ৩৬ হেক্টর অর্থাৎ ২৭০ বিঘা। এর মধ্যে উফশি জাতের ৯১ হাজার ২৭৬, স্থানীয় জাতের ৩৫৫ ও হাইব্রিড জাতের ধান ২১ হাজার ৫৭৫ হেক্টরে আবাদ হয়। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮১ মেট্রিক টন। উৎপাদিত ধান থেকে চাল হবে তিন লাখ ৬৭ হাজার ৯২৬ মেট্রিক টন। সবমিলিয়ে জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আমনের উৎপাদন।

সোমবার বাড়ির উঠানে আমন মাড়াই করছিলেন জেলা সদরের নিউবাবু পাড়ার কৃষক আলতাফ হোসেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘এবার তিন বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের আমন আবাদ করেছি। গত বর্ষায় প্রচুর বৃষ্টি নামায় রোগবালাই ছাড়াই ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘায় ২০ মণ ফলন পেয়েছি। এবার বাজারে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এই দর থাকলে গত দুই বছরের চেয়ে বেশি লাভবান হবো।’

পাঁচ বিঘা জমিতে উফশি জাতের আমন আবাদ করেছেন জেলা সদরের চাষি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় বিঘায় ১৮ থেকে ২০ মণ ধান হয়েছে। আবাদে তেমন কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি। বাজারে দাম ভালো পাচ্ছি। প্রতি মণে এক হাজার ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছি। গত বছর এক হাজার ১০০-২০০ টাকা করে বিক্রি করেছিলাম। এবার খরচ বাদে ভালোই লাভ হবে।’

চলতি মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার সদরে ২৮ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এখন ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। ধানের এই দর থাকলে গত দুই বছরের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।’

এবার জেলায় আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে বলে জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। অনেকগুলো মাঠ ঘুরে দেখেছি, দুই-তিন বছরের তুলনায় ভালো ফলন হয়েছে। আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার শুরুতেই ধানের দাম বেশি। এজন্য উপকৃত হচ্ছেন চাষিরা।’

Source link

Related posts

পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধে কঠোর হলো বিইআরসি

News Desk

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের খামারের জন্য কাটা হচ্ছে অর্ধশতাধিক গাছ

News Desk

৫ দিনের সফরে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি

News Desk

Leave a Comment