জমিতে অধিক ফলন ও বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ক্ষতিকর তামাক চাষ। তামাক চাষে লাভ বুঝলেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি সম্পর্কে জানেন না অনেক চাষি। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই বছরের পর বছর তামাক চাষ করছেন উপজেলার চিরাং, দুল্লী, বৈরাটী ও ছিলিমপুরসহ বেশ কয়টি এলাকার বাসিন্দারা। এতে কৃষক এবং তার পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।
দুল্লী এলাকার তামাক চাষি বদরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থেকেই আমরা তামাক চাষ করে আসছি। এতে আমাদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় না। ধান চাষের তুলনায় তামাক চাষে আমরা দ্বিগুণ আয় করে থাকি। কৃষি অফিস থেকেও তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে চাষাবাদে নিষেধ করা হয়নি। তাই বছরের পর বছর তামাক চাষ করে আসছি।’
ছিলিমপুরের তামাক চাষি কামাল হোসেন বলেন, ‘তামাক চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে অনেক সময় তামাক চাষিদের সর্দি-কাশি দেখা দেয়। আর অসুস্থ হলেও এটিকে স্বাভাবিক রোগ মনে করেন চাষিরা। কারণ আমরা অনেকেই তামাক চাষে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা জানি না। তবে মাঝেমধ্যে নানা রোগে আক্রান্ত হই।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২-এর প্রধান চিকিৎসক খোরশেদ আলম বলেন, ‘তামাক চাষ মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ। ফুসফুসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে। অধিকাংশ তামাক চাষির ফুসফুসে সমস্যা থাকার কথা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে সবার রোগ ধরা পড়বে। হয়তো এটি জানেন না তামাক চাষিরা।’
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এফএম মোবারক আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নেত্রকোনায় ১৩ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন চাষি ও আশপাশের মানুষজন। তামাক চাষ বন্ধে শিগগিরই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ওসব এলাকার কৃষকরা যাতে তামাক চাষের বিকল্প ফসল উৎপাদন করেন, সেজন্য তাদের পরামর্শ দেওয়া হবে।’