ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে ৫০ শয্যার মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকার কারণে হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধ ও উচ্চ রক্ত চাপসহ নানা রোগে আক্রান্তরা গরমে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। স্বজনরা রোগীদের হাতপাখা, কাগজ ও কাপড় নাড়িয়ে বাতাস করতে দেখা গেছে। আর জরুরি বিভাগে মোবাইলের ফ্ল্যাশ ও টর্চ লাইট ধরে করা হচ্ছে রোগীদের সেলাই ও ড্রেসিংয়ের কাজ করছেন। হাসপাতালের নিজস্ব বিদ্যুৎ (জেনারেটর অকেজো) ব্যবস্থা না থাকায় চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন অন্ধকারে। এ ছাড়া হাসপাতালের ফ্রিজে থাকা টিকাসহ নানা ওষুধও নষ্টের উপক্রম হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (২২ জুলাই) সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী মো. আসলাম বলেন, ‘বার বার বিদ্যুৎ যাচ্ছে। এতে সুস্থ হওয়ার জায়গায় আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। গরমে খুব খারাপ লাগছে।’
রোগীর স্বজন মো. জাকির, রহিমা বেগম ও শোভা মন্ডল বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা চার বার বিদ্যুৎ গেছে। এতে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সের রোগীর খুব কষ্ট হচ্ছে। সুস্থ হওয়ার চেয়ে গরমে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগীরা। সেই সঙ্গে স্বজনরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। রোগীদের স্বস্তির জন্য হাতের কাছে যা পাচ্ছেন তা নাড়িয়েই বাতাস করার চেষ্টা করছেন।
শুক্রবার বিকালে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার ঠোঁট কেটে যায়। হাসপাতালে এসে দেখি বিদ্যুৎ নেই, চিকিৎসকরা মোবাইলের লাইট ধরে সেলাই দিয়েছেন। ঠিকঠাক হয়েছে কি-না জানি না। আর আমার পাশে এক রোগীকেও অন্ধকারে ড্রেসিং করা হয়েছে।’
এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. আফসানা নাইমা হাসান বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে হাসপাতালে রোগী দেখা, সেলাই, ড্রেসিং করা ও ভর্তি থাকা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালের টিকাসহ অন্যান্য মেডিসিনও নষ্টের উপক্রম হয়ে পড়েছে। যদিও এটি জাতীয় সমস্যা, তারপরও হাসপাতাল অন্তত লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখাটা জরুরি।’
এদিকে, লোডশেডিংয়ের আগে পিডিবি কর্তৃপক্ষের ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়েই যখন তখন বিদ্যুৎ নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন দিন ও রাতে মিলিয়ে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন পিডিবির মোংলা আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন।