দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে যশোর সদর আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে। সে জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের ফরিদপুর বাজারে বিশাল পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
পথসভায় বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ অভিহিত করে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল জায়গায় নিয়ে গেছেন। একমাত্র তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব। অল্প সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম এখন গোটা বিশ্বে আলোচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জননেত্রীর এই উন্নয়ন কার্যক্রমের রহস্য জানতে চায়।’
দরিদ্র মানুষদের জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের কথা চিন্তা করেন। সে কারণে বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতাসহ প্রায় ১৩০টি ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি দেশের কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিভিন্ন খাতে দারুণ উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে এ দেশের দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। আওয়ামী লীগের এই শাসনামলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিয়ে যেতে পেরেছেন। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়েছিল জোট সরকার। ২০১২ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত ওই চক্র সারা দেশে নাশকতা, রেললাইন উপড়ানো, গাছ উপড়ানো, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মতো জঘন্য কাজ করেছে।
‘স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্র চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সেই একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে চলেছে। তারা বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তান বানাতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে দেবে না।’
সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে আমাদের জননেত্রীর হাতে শক্তিশালী করতে হবে।’
পথসভায় বক্তৃতাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘আমাদের সামনে নৌকার কোনও বিকল্প নেই। যারা অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন, তারা সুযোগসন্ধানী, তারা ভেজাল। আপনাদের কাছে অনুরোধ, কেউ জননেত্রীর কথার বাইরে একটুও যাবেন না। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই নৌকার ভোট চাচ্ছেন।’
ডামি প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুকুরে জাল দিয়ে মাছ তুললে ছোট মাছগুলো খুব চ্যাংব্যাং করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে তারা মারা যায়। এখন যারা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে লাফাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তারা সবাই নৌকায় উঠবে, অন্য জায়গায় যাবে না।’
দেয়াড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় যুবলীগ নেতা লিয়াকত আলী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হুমায়রা আজমিরা এরিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
পথসভা শেষে তিনি ফরিদপুর বাজারে নৌকার ভোট চেয়ে স্থানীয়দের মাঝে লিফলেট ও কুশল বিতরণ করেন।
এর আগে তিনি বাঁশবাড়িয়া মোড়ে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও তাদের কাছে নৌকার ভোট প্রার্থনা করেন।