কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল খনন প্রকল্পের পানির স্রোতে গিদারি নদী নামক খালের ওপরের ১০ মিটার আয়তনের ব্রিজটি শেষ পর্যন্ত ধসে পড়েছে। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও ভারী যান চলাচল বন্ধ করেও ব্রিজটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে ব্রিজটি খালে ধসে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাগজিপাড়া গ্রামের গিদারি নদী নামক খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটি অর্ধশত বছর পুরনো। ইউনিয়নের ছয় গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের যাতায়াতে এটি ব্যবহৃত হচ্ছিল। ব্রিজটি ধসে পড়ায় বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যাতায়াত সুবিধা ভেঙে পড়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
তবে পাউবোর দাবি, খাল খননের কারণে নয়। পানির স্রোতে সেতুর অ্যাবাটমেন্ট ও পায়ারের নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। জিও ব্যাগ ফেলা হলেও শেষ পর্যন্ত ব্রিজটিকে রক্ষা করা যায়নি।
চাকলির পাড় গ্রামের বাসিন্দা মোকছেদ আলী বলেন, ‘ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় আমাদের এলাকার অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি হলো। যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে এলাকাবাসীকে বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। কবে নতুন ব্রিজ হবে, এই বিড়ম্বনার শেষ হবে তা বলা মুশকিল।’ মানুষের চলাচলের স্বার্থে দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
আরেক বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও ব্রিজটা আটকানো গেলো না। সরকার যেন দ্রুত একটা ব্রিজ করি দেয়। না হইলে আমাদের ভোগান্তির শ্যাষ থাকবার নয়।’
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘খাল খননের জন্য নয় বরং এর নিচের একটি অংশ দিয়ে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। ফলে পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে তীব্র স্রোতের কারণে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি ঝুঁকিতে পড়েছিল। তারপরও আমরা জিও ব্যাগ ফেলে এটি রক্ষার চেষ্টা করেছিলাম।’
উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ব্রিজটি অনেক পুরনো। ঝুঁকিতে পড়ার পর আমরা যাতায়াত নিয়ন্ত্রণসহ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রিজটি ধসে পড়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী ওই স্থানে নতুন ব্রিজ নির্মাণে প্রাক্কলন তৈরি করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। অনুমোদন হয়ে আসলে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।’
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও বলেন, ‘এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে আপাতত একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সাঁকো নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’