করোনা সংক্রমণ রোধে সারা দেশে চলছে কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ)। ফলে চিরচেনা সদরঘাটের চিত্র গেছে পাল্টে। ব্যস্ত সদরঘাট এখন ফাঁকা। বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল। এদিকে এই লকডাউনের মধ্যেও টার্মিনালে দক্ষিণাঞ্চলগামী কয়েকজন যাত্রীকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। ঘাটে নোঙর করা বিভিন্ন লঞ্চে তারা খোঁজ নিচ্ছেন, রাতে কোনো লঞ্চ ঘাট ছেড়ে যাবে কিনা।
শনিবার (২৪ জুলাই) লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর সদরঘাটে এমনটি দেখা যায়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা নদীবন্দর ও লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, লকডাউন শিথিল বা সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চে যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে।
লালকুঠি ঘাট থেকে ওয়াইজঘাট পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল বিস্তৃত। দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে প্রবেশের প্রতিটি ফটকে তালা লাগানো। ঢাকা নদীবন্দর অফিসের পূর্ব এবং পশ্চিম পাশে দুটি ফটক খোলা।
ভেতর গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের প্রতিটি পন্টুন ফাঁকা। লঞ্চ এবং যাত্রী কেউ নেই। এতে ঘাটটি অচেনা পরিবেশে রূপ নিয়েছে। ওয়াইজঘাট বরাবর পন্টুনে বরিশালগামী মানামী, সুরভী-৮ সহ সাতটি লঞ্চ নোঙর করা রয়েছে। এসব লঞ্চের সামনে দক্ষিণাঞ্চলগামী কয়েকজন যাত্রীকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। সায়েদাবাদ থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গেছেন বরিশালের উজিরপুরের মো. হাসান। কিন্তু কোনো লঞ্চ না পেয়ে হতাশ তিনি।
হাসান জানান, সায়েদাবাদে একটি ছোট প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করতেন তিনি। ঈদের পর কারখানা চালু রাখা হবে বলে তার মালিক জানিয়ে ছিলেন। তাই ঈদের আগে গ্রামে যাননি। এখন প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। তাই গ্রামে যাওয়ার জন্য ঘাটে এসেছেন। মানামী লঞ্চের স্টাফ তানভীর খন্দকার বলেন, তাদের লঞ্চের অধিকাংশ এখন ছুটিতে। লঞ্চ দেখার জন্য কয়েকজন আছেন। লকডাউনে লঞ্চ চলাচল করবে না বলে মালিক পক্ষ পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। ৬টার আগে দক্ষিণাঞ্চল থেকে অনেকগুলো লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঘাটে আসে। এরপর সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়নি। কোনো লঞ্চ আসেনি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউনে যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে।