ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। সেই সাথে বুধবার (২৬ মে) সকাল থেকে চট্টগ্রামে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত ও বাতাসের গতিবেগ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উত্তম কান্তি পাল বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত (গত ২৪ ঘণ্টায়) চট্টগ্রামে বৃষ্টি হয়েছে ৫ মিলিমিটার। আজ সন্ধ্যার পর থেকে ইয়াসের প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। সেই সাথে বাতাসের গতিও বাড়তে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইয়াস ও পূর্ণিমার কারণে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে তিন থেকে ছয়ফুট পানির উচ্চতা বেশি থাকবে। এতে করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জে পি দেওয়ান বলেন, সন্দ্বীপে ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখনও কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি।
তিনি বলেন, জোয়ারের পানি এখনও সন্দ্বীপের লোকালয়ে প্রবেশ করেনি। বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছি। জোয়ারের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি আছে। জোয়ারের পানি যদি আরও চার-পাঁচ ফুট বাড়ে তখন লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে। তবে আপতত কোথাও পানি প্রবেশ করেনি। সন্দ্বীপে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বৃষ্টি হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ইয়াসের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় ও বৃষ্টির কারণে বন্দরের বহির্নোঙ্গরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কেউ কেউ বন্ধ রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বন্দরে আবহাওয়া সংকেত বাড়লে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে- খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালীসহ আশপাশের এলাকা। পূর্ণিমার কারণে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এছাড়া সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অতিক্রম করার সময়ে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।