সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। বাবার মৃত্যুর পর লাশ দাফনে বাধা দেয় এক পক্ষ। পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের মধ্যস্থতায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনা ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উদরাজপুর গ্রামের।
ওই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবু আহমেদ (৯০) গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে মারা যান। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু আহমেদের দুই জন স্ত্রী ছিলেন। দুই সংসারে সাত ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছেন। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার তিন ছেলেকে সব সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের অভিযোগ, তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে আবু আহমেদ মারা যান। গতকাল বুধবার সকালে তার দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় দুই স্ত্রীর সন্তানের মধ্যে সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা বাবার দাফনে বাধা দেন। তখন দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন।
খবর পেয়ে দাগনভূঞা থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নিহত ব্যক্তির সন্তানদের নিয়ে থানার ওসি হাসান ইমাম বৈঠক করেন। সেখানে সম্পত্তি ভাগের বিষয়টি পরে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আবু আহমেদের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রথম স্ত্রীর ছেলে মো. সোহেল বলেন, ‘বাবাকে জিম্মি করে তারা কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকার ৬২ শতক এবং দাগনভূঞার আমান উল্যাহপুর ও উদরাজপুর গ্রামের ৭২ শতাংশ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেছেন। আমরা সম্পত্তির ভাগ চাই।’
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইমামউদ্দীন বলেন, ‘বাবার শেষ বয়সে আমরা সেবা-যত্ন করেছি। ওষুধ কিনেছি। বাবা খুশি হয়ে আমাদের নামে জমি লিখে দিয়েছেন।’
দাগনভূঞা থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের অঘটনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মৃত ব্যক্তির স্বজনদের উপস্থিতিতে সমঝোতার মাধ্যমে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।