সাগর উত্তাল, ঘাটে ফিরেছে মাছ ধরার শত শত ট্রলার
বাংলাদেশ

সাগর উত্তাল, ঘাটে ফিরেছে মাছ ধরার শত শত ট্রলার

উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এরফলে নিরাপদ আশ্রয়ে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে মাছ ধরার শত শত ট্রলার। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে আচমকা সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্যবন্দর আলীপুর ও মহিপুরের ঘাটে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত জেলেরা।

শুক্রবার সকালে মৎস্যবন্দর দুটি ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জেলেদের ট্রলার আশ্রয় নিচ্ছে এই মৎস্যবন্দরে। তবে উপকূলে ফেরা জেলেদের চোখেমুখে ছিল হতাশার ছাপ। এবার ইলিশের ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ ইলিশের দেখা পাননি বলে জানিয়েছেন জেলেরা।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঘনঘন ঝড়, বন্যা ও বৈরী আবহাওয়ার কবলে পরে নিঃস্ব হচ্ছে জেলে মৎস্যজীবীরা। তারা বলছেন, সমুদ্রে গিয়ে যখনই ইলিশ পাচ্ছেন, তখনই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পরে খালি হাতে ঘাটে ফিরে আসতে হচ্ছে।

মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গত ২০ মে থেকে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে শুরু হয় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ২৩ জুলাই সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১২ বার আবহাওয়া খারাপ হয়েছে বলে জানান জেলারা। তারা বলছেন, এতে করে তারা একদিকে যেমন লোকসানের মুখে পড়ছেন, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য পেশা।

তাদের কেউ কেউ বলছেন, বছরের বেশিরভাগ সময়ে এভাবে নিষেধাজ্ঞা আর আবহাওয়া খারাপ হলে পেশায় টিকে থাকা দায় হয়ে যাবে। লোকসান কাটাতে ফিরতে হবে অন্য পেশায়।

ঘাটেই এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল ‘এফবি তামান্না’ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলারের মাঝি ইউনুস মিয়ার। তিনি বলেন, ‘গত রাতে হঠাৎ সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। সমুদ্রে টিকতে না পেরে ঘাটে ফিরে আসতে হয়েছে। যে পরিমাণ টাকা খরচ করে সমুদ্রে গিয়েছিলাম, তার অর্ধেক টাকারও মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরতে পারিনি।’ 

মৎস্যবন্দর আলীপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে আলীপুর মহিপুরের অধিকাংশ ট্রলার ঘাটে ফিরে এসে খাপড়াভাঙ্গা নদীতে নোঙ্গর করেছে। ঘন ঘন বৈরী আবহাওয়া ও নিষেধাজ্ঞার কারণে এ ব্যবসায় ধস নেমেছে।’

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জেলেদের ট্রলার আশ্রয় নিচ্ছে মৎস্য বন্দরে

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘আকস্মিক আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে উপকূলের মাছ ধরা ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে থেকে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে অধিকাংশ ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে। এখনও অনেক ট্রলার সমুদ্রে রয়েছে। আজ রাতের মধ্যে সব ট্রলার ঘাটে ফিরে আসবে।’

পটুয়াখালীর আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত সকল মাছধরা ট্রলার ও নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

Source link

Related posts

ঢাকার সিটি বাস সার্ভিস রুটগুলো এবং কোন বাস কোথায় যায়

News Desk

যে গ্রামে কখনও যায়নি চার চাকার যান

News Desk

ঈদে নির্দেশনা না মানলে আরও কঠোর বিধিনিষেধের তাগিদ

News Desk

Leave a Comment