সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমের আম পাড়া শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সূচি মোতাবেক বৃহস্পতিবার (০৯ মে) থেকে পাঁচ জাতের আম গাছ থেকে পাড়তে শুরু করেছেন চাষিরা। এদিন গোপালভোগ, গোলাপখাস, শরিখাস, বৈশাখী ও বোম্বাই পাঁচ জাতের আম পেড়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
সকালে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আয়োজনে সদর উপজেলার কুখরালীর আম চাষি মোকছেদ মোড়লের বাগান থেকে আম পেড়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক ইকবাল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত।
চাষি মোকছেদ মোড়ল জানিয়েছেন, আজ থেকে গোপালভোগ, গোলাপখাস, শরিখাস, বৈশাখী ও বোম্বাই আম পাড়া শুরু হয়েছে। আমরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছি।
জেলায় আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করার সংশোধিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী—৯ মে থেকে গোপালভোগ, গোলাপখাস, শরিখাস, বৈশাখী ও বোম্বাই জাতের আম; ১১ মে থেকে গোবিন্দভোগ; ২২ মে থেকে হিমসাগর; ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন থেকে আম্রপালি পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এতে ২৫০ কোটি টাকার বেশি আয় হবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৬৮ হাজার ৮১৯ মেট্রিক টন। বিক্রি করে আয় হয়েছিল ২৫৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাতক্ষীরার আমের সুখ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিদেশেও রফতানি হয়। কয়েক বছর ধরে আম পাকার সময় পর্যালোচনা করে পাড়ার দিন নির্ধারণ করা হয়। এবারও আমের মান ঠিক রাখতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও আম চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজটি করা হয়েছে।’
এবার চার হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে জানিয়ে সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আম নামবে পাঁচ পর্বে। ৯ মে গোপালভোগের পর ১১ মে পাড়া শুরু হবে গোবিন্দভোগ। সবচেয়ে বেশি আকর্ষণের হিমসাগর আম বাজারে আসবে ২২ মে। ২৯ মে ল্যাংড়া এবং সবশেষে আসবে উচ্চফলনশীল আম্রপালি।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘গত বছর সরকারি যোগাযোগে ১২৫ মেট্রিক টন সাতক্ষীরার আম ইউরোপের বাজারে গিয়েছিল। এবার তা ৫০০ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’