সিলেটে দোকান খুলতেই ক্রেতার লাইন, দাম দ্বিগুণ
বাংলাদেশ

সিলেটে দোকান খুলতেই ক্রেতার লাইন, দাম দ্বিগুণ

বন্যার অজুহাতে সিলেটের কিছু ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রি করছেন নিত্যপণ্য। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা যখন ব্যস্ত রয়েছেন- সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (১৮ জুন) সিলেট নগরীর আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও কালিঘাটের ব্যবসায়ীদের দ্বিগুণ দামে চিড়া, মুড়ি ও গুড় বিক্রি করতে দেখা গেছে। রবিবার বাজারে শুকনো খাবার সংকটের অজুহাতে একই দামে পণ্য বিক্রি করছেন তারা।

বন্যায় ঘর ছেড়ে আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নেওয়া গৃহিণী নাজমিন বেগম দাবি করেন, ‘রবিবার নগরীর আম্বরখানা এলাকা থেকে এক কেজি মুড়ি ১২০, ভাজা চিড়া আধা কেজি ১০০, ২৫০ গ্রাম গুড় ৫০ ও এক প্যাকেট মোমবাতি ১২০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’

তার অভিযোগ, ‘একদিকে বন্যায় মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দ্বিগুণ দামে পণ্য বিক্রি করে যাচ্ছেন।’ এ জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

একই অভিযোগ করেন নগরীর জিন্দাবাজারের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের মধ্যে ন্যূনতম সহযোগিতার মানসিকতা নেই। কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ চলে গেলে দুই প্যাকেট মোমবাতি কিনেছি ১৮০ টাকা দিয়ে। মুড়ি আধা কেজি কিনেছি ১০০ টাকা দিয়ে।’

কালিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সুমন আহমদ জানান, বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের দোকানপাট তলিয়ে যাওয়ায় নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি দামেও মিলছে না চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য। বন্যার পানিতে বহু দোকান তলিয়ে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘বাজারে নিত্যপণ্য অতিরিক্ত দামে বিক্রি হওয়ার খবর শুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদারকির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদারকিতে রেখেছে।’

জানা গেছে, নগরীর আম্বরখানা, মিরাবাজার, মদিনা মার্কেট, কালিঘাট, উপশহর, টিলাগড়, মেজরটিলা ও শহরতীর নয়াবাজার, বাদাঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ডিমের হালি ৫০, আলু ৩০, মোমবাতির প্যাকেট ৮০ ১০০, গুড় ১৫০-২০০ ও কলা প্রতি হালি ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সিলেটে বেড়েছে সবজির দাম। ২০ টাকার ঢেঁড়স ৩০-৩৫, পটল ২৫-৩০, বরবটি ৬০-৭০ ও দেশি মসুর ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বেড়েছে মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দাম।

নগরীর মদিনা মার্কেটের পরাগ স্টোরের মালিক শিমুল রঞ্জন ধর দাবি করেন, ‘বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সকালে দোকান খুলিনি। দুপুরে বৃষ্টির পরিমাণ কমলে দোকান খোলা মাত্র ক্রেতারা লাইন দিয়ে নিত্যপণ্য ক্রয় করা শুরু করেন।’

তিনি বলেন, ‘যিনি আগে এক কেজি আলু কিনতেন তিনি ১০ কেজি কিনছেন। ফলে নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যায় সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালীঘাট ও কাজিরবাজার পানির নিচে। এতে নিত্যপণ্যের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে দোকানে পণ্যের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে।

Source link

Related posts

কমেনি হাতপাখার কদর

News Desk

মনোনয়নপত্র দাখিল অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ৫

News Desk

সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা

News Desk

Leave a Comment