চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা। আবারও বিস্ফোরণ হতে পারে, এমন আতঙ্কে অনেকেই এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। সোমবার (৬ জুন) দুপুর ১ট পর্যন্ত ঘটনার ৪০ ঘণ্টা পরও ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক রয়ে গেছে। ডিপোতে কাজ করা শ্রমিকেরা যেসব এলাকায় থাকতেন, সেখানকার ঘরগুলো এখন প্রায় সবই খালি।
দুপুর পর্যন্ত বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোর আশপাশের গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, আতঙ্কিত বাসিন্দারা অনেকেই আত্মীয় বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বেশির ভাগ পরিবারের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের বিভিন্ন এলাকায় স্বজনদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বেলা আড়াইটার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরেজমিন বিএম কনটেইনার ডিপো এলাকা পরিদর্শন করেন এবং অগ্নি নির্বাপণে নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত শনিবার রাতে বিএম ডিপোতে প্রথম বিস্ফোরণের পর থেকেই লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত আগুন নিভে যাবে—এমনটাই ভেবেছিলেন তারা। তবে এখনও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় তারা চিন্তিত।
দুপুুরে ডিপোর পাশের কেশবপুর গ্রামে কথা হয় স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের পরের দিন ভয়ে ছোট দুই সন্তানকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। ভেবেছিলাম আমরা যাবো না। কিন্তু এখনও আগুন আছে, আবার বিস্ফোরণ হয় কি না, সে আতঙ্কে বাড়ি ছাড়তে চাইছি এখন।’
ডিপো এলাকার মোল্লাপাড়া গ্রামের দোকানি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমার দোকানে দৈনিক ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা বিক্রি হতো। আগুনের ঘটনার পর বিক্রি ছয় থেকে সাত হাজারে নেমেছে। ডিপোতে আবার বিস্ফোরণের ভয়ে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন।’
কেশবপুর গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সেলিনা বলেন, বিস্ফোরণের আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয়রা। অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। আরও অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান এমন আতঙ্কের কথা জানিয়ে বলেন, ২৭টি রাসায়নিক কন্টেইনারের মধ্যে ১১টি ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে থাকা আরও চারটি কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। যেসব কনটেইনারে ধোঁয়া ও আগুন দেখা যাচ্ছে, তা বন্ধেরও চেষ্টা চলছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর বাকি কাজ করা হবে।’