Image default
বাংলাদেশ

সীতাকুণ্ডে বাদাম চাষে বাজিমাত ৫ কৃষকের

সীতাকুণ্ডে প্রথম বাদাম চাষেই বাজিমাত করলেন ৫ কৃষক। কৃষি বিভাগের পরীক্ষামূলক চাষে অংশ নিয়ে তারা প্রত্যেকেই ক্ষেতে বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। এ সাফল্যে তারা যেমন খুশি তেমনি খুশি কৃষি বিভাগও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের উর্বর মাটিতে সারাবছর নানারকম শাক-সবজি ও ফল উৎপাদন করেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে এখানে চিনা বাদাম চাষ ছিল না। চিনাবাদাম চাষে আদৌ কোন সফলতা আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন খোদ কৃষকরা। এমনি অবস্থায় চলতি বছর উপজেলা কৃষি বিভাগ এখানে চিনা বাদাম চাষ শুরু করার উদ্যোগ নিলে বেশিরভাগ কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন কৃষককে এ বিষয়ে বোঝানোর পর সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, বাড়বকুন্ড, কুমিরা ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৫ জন কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহী হন ও তাদের বাম্পার ফলন হয়।

কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য পেয়ে সরেজমিন কুমিরা ও বাড়বকু- ইউনিয়নের দুই কৃষকের ক্ষেতে ঘুরে দেখা গেছে, এসব ক্ষেতে প্রচুর ফলন হওয়ায় কৃষকরা উচ্ছ্বসিত। পরিদর্শনকালে কুমিরা ইউনিয়নের ছোটকুমিরার কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে আমার এলাকায় বাদাম চাষ ছিল না। আমিও কখনো ভাবিনি চিনা বাদাম চাষ করব।

এবার কৃষি কর্মকর্তারা আমাকে বলেন, এখানে চিনা বাদাম চাষ করলে তারা সহযোগিতা করবেন। তাতে সফলতা আসবে বলে তারা মনে করেন। এতে তিনি রাজি হন। একপর্যায়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে বিনামূল্যে ঢাকা-১ জাতের ১৫ কেজি চিনা বাদামের বীজ দেওয়া হয়। এসব বীজ পেয়ে তাদের পরামর্শ মতো গত ২৬ জানুয়ারি তার ৩৩ শতক জমিতে চিনা বাদাম চাষ করেন। কৃষি কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা, তার নিয়মিত পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শেষ পর্যন্ত জমি থেকে ১৫০ কেজি বাদাম উৎপাদন হয়েছে। এতেই তিনি খুশি।

কুমিরা এলাকার দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজন কান্তি ঘোষ বলেন, এখানে চিনা বাদাম চাষ হতো না। এবার আমরা কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ বৃদ্ধির চেষ্টা করেছি।

বাড়বকু- ইউনিয়নের নড়ালিয়া এলাকার কৃষক শহীদুল ইসলামও কৃষি বিভাগ থেকে প্রদর্শনীর জন্য বিনামূল্যে ১৫ কেজি চিনা বাদাম পেয়ে চাষাবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে অনুপ্রাণিত করা না হলে বাদাম চাষের কথা চিন্তাও করতেন না। ৪০ শতক জমিতে তিনি চিনা বাদাম চাষ করেছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রতন কান্তি দত্ত বলেন, হালকা বেলে দোঁআশ মাটিতে চিনা বাদাম চাষ ভালো হয়। সীতাকুণ্ডের মাটিও চিনা বাদাম চাষের জন্য উপযোগী। এদিকে বাদাম চাষ বিষয়ে উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কৃষি অফিসার রঘুনাথ নাহা বলেন, সীতাকু-ে বাদাম চাষ ছিল না। এখানে উন্নতমানের বাদাম চাষের জন্য আমরা সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, বাড়বকু-, কুমিরা ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নে একজন করে কৃষককে বিনামূল্যে ১৫ কেজি করে বাদামসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ও পরামর্শ দিয়ে চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি। চাষাবাদশেষে দেখা গেছে তারা প্রতি হেক্টরে ৩.৮ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদন করেছেন। এতে আমরা আশা করছি আগামী বছর থেকে আরো অনেক কৃষক বাদাম চাষে এগিয়ে আসবে।

Related posts

কুয়াকাটায় মরিচ ক্ষেতে যুবকের লাশ

News Desk

নদীগর্ভে বিলীন একের পর এক বসতভিটা, তিস্তার তীরে বুকফাটা কান্না

News Desk

হিলিতে সজনের কেজি ১৫, কাঁচা কাঁঠাল ৪০ 

News Desk

Leave a Comment