সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
বাংলাদেশ

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে গ্রামীণ সড়ক ভেঙে পানির তোড়ে ১০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে ভাদেরটেক গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি। এছাড়া ঢলে হাওরের বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছেন।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে উজানের ঢলে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের ভাদেরটেক গ্রামে গজারিয়া রাবার ড্যামের পাশের সড়ক ভেঙে হু হু করে পানি ঢুকছে হাওরে। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে ওইসব ঘরবাড়ি।

ভাদেরটেক গ্রামের ফজু মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে চলতি নদীতে ঢল নেমেছে। ঢলের পানি রাবার ড্যাম উপচে গ্রামে ঢুকছে। পানির চাপে রাবার ড্যাম নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার ঘরটাও ভেঙে নদীতে পড়েছে।’

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘চলতি নদীর পানির চাপে গ্রামের সড়ক তিন জায়গায় ভেঙে গিয়ে গ্রামে ও হাওরে পানি ঢুকছে। সড়কের পাশে যাদের বাড়িঘর তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’

ইয়াছমিন বেগম বলেন, ‘আমাদের ঘর মেরামতের টাকা নেই। সরকার সাহায্য করলেই ঘর বানানো সম্ভব হবে।’

সলুকাবাদ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শাহপরান বলেন, ‌‘ভাদেরটেক গ্রামের ১০টি বসতঘর পুরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে শতাধিক বাড়িঘর। আকস্মিক ঢলের পানিতে ঘরের আসবাবপত্র, থালাবাসন, ধান-চাল ভেসে গেছে।’

সলুকাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকি তপন বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান। ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করা হয়েছে। পানি কমলে পুরো তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সফর উদ্দিন বলেন, ‘ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভাদেরটেক গ্রাম। অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। পানির চাপ কমাতে রবার ড্যাম দুই ফুট নিচু করে দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া বলেন, ‘খরচার হাওরের সব ধান কাটা শেষ। এখন উঁচু জমিতে কিছু ধান আছে যা আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে কাটা হয়ে যাবে। তবে ঢলে বাদাম ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ১০ কেজি চাল, তেল, গুড়, সাবান, মোমবাতি, দিয়াশলাই ও চিড়া বিতরণ করা হয়েছে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, ৪৮ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৪০৯ এবং সুনামগঞ্জে ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃষ্টিপাত কমলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

Source link

Related posts

ভূমিকম্পে কুমিল্লার মসজিদে ফাটল

News Desk

বিএনপির গণসমাবেশে গিয়ে মোবাইল-মানিব্যাগ হারিয়ে কাঁদছেন যুবদলকর্মী

News Desk

নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচন করবে না: সেলিমা রহমান

News Desk

Leave a Comment