মহান বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে সুন্দরবনের করমজলে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সুন্দরবনের করমজলে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। এদিন করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে প্রায় দুই হাজার পর্যটক এসেছেন।
আগত পর্যটকরা ট্রলার ও লঞ্চে করে বনের নানা প্রান্তে গিয়ে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবনের সৌন্দর্য। এর আগের দিন শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) এই কেন্দ্রে পর্যটক এসেছিলেন প্রায় দেড় হাজার। চলতি মাসের মধ্যে শুক্র ও শনিবার সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছেন করমজলে। এই মাসের বিগত দিনগুলোতে এখানে পর্যটকের আগমন গড়ে তিন শতাধিক।
শনিবার বিকালে রংপুর থেকে সুন্দরবনে ঘুরতে আসা মীর আনোয়ার আলী বলেন, ‘আগে কখনও সুন্দরবনে আসিনি। এবার দুই দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আগামীতে বড় ছুটি পেলে আবারও আসবো।’
নড়াইল থেকে আসা ঝরনা আক্তার বলেন, ‘সুন্দরবন, প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী যা দেখেছি, সবই মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতির বৈচিত্র্য কাছ থেকে দেখেছি। পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। অনেক সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছি।’
পর্যটক বেশি আসায় আয় বেড়েছে বলে জানালেন পশুর নদীর বোটচালক মো. বাদল হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার ও শনিবার আয় দ্বিগুণ হয়েছে আমাদের।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, করমজলে দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য রয়েছে টেইলর, ওয়াচ টাওয়ার, কুমির ও কচ্ছপের প্রজননকেন্দ্র। রয়েছে বনের হরিণ ও বানর। বনের বৃক্ষরাজির পরিচিতি জানতে গাছের গায়ে লিখে রাখা হয়েছে নাম। এছাড়া আছে একটি জাদুঘর। যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে সুন্দরবনের বাঘ, হরিণ ও কুমিরসহ বিভিন্ন প্রাণীর কঙ্কাল। মমি করে রাখা হয়েছে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। পাশাপাশি পশুর নদীর তীরের প্রাকৃতিক বনঘেরা নিবিড় পরিবেশে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ দেখে চোখ জুড়ায় পর্যটকদের।
মোংলা থেকে কাছাকাছি হওয়ায় করমজলে অন্যান্য স্পটের তুলনায় দর্শনার্থী বেশি আসছেন বলে উল্লেখ করেছেন করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির।
তিনি বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিন করমজলে দুই হাজার পর্যটক এসেছেন। পাশাপাশি হাড়বাড়ীয়া ইকোট্যুরিজম, নীলকমল, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও আন্ধারমানিকসহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর বেশি পর্যটক আসায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ফিরেছে প্রাণ।’