ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। ঈদের দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি পর্যটনের আগমন ঘটে ঈদের পরদিন। দেশের দূরদূরান্ত থেকে বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারসহ ছুটে আসছেন পর্যটকরা। আগামী ছুটির দিনগুলোতে আরও বেশি পর্যটক বাড়বে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে।
ঈদের দিন শুধু বনের করমজল পর্যটন স্পটেই সহস্রাধিক লোক হয়। পরদিন শুক্রবার (১২ এপ্রিল) আড়াই হাজারের মত দর্শনার্থী এই এলাকা ভ্রমণে আসেন। দেশের যেকোনও জায়গা থেকে মোংলায় আসার পর এখান থেকে সবচেয়ে কাছের ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র করমজলেই আগ্রহ সবচেয়ে বেশি ভ্রমণপিয়াসীদের। এছাড়াও বনের হাড়বাড়ীয়া, কটকা, কচিখালী ও আন্ধারমানিকসহ অন্যান্য স্পটেও ঢল নেমেছে পর্যটকদের। এই ছুটিতে বড় বড় বিলাসবহুল লঞ্চে সুন্দরবন ভ্রমণ করছেন নানা দেশের নানা বয়সের মানুষেরা।
সুন্দরবন ঘুরতে আসা রাজশাহীর শিক্ষার্থী শামসুননাহার ডারিন ও মিজানুর রহমান মিজু বলেন, এর আগে কখনও সুন্দরবনে আসা হয়নি, এবারই প্রথম এসেছি। না আসলে বোঝাই অসম্ভব সুন্দরবন আসলেই কতো সুন্দর। খুব ভালো লেগেছে। বন্ধু-বান্ধব মিলে ভীষণ আনন্দ করলাম।
সিলেটের মাদ্রাসা শিক্ষক মিজবাহ উদ্দীন ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী অলিপ গোলদার বলেন, সুন্দবনে এসে হরিণ, কুমির, বানর, কচ্ছপ দেখলাম। সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ারের ওপর থেকে ছাতার মতো বিস্তৃত বনের বিভিন্ন গাছপালা দেখে প্রাণ ভরে গেছে। কি সবুজ সজিব শীতল পরিবেশ! মনে হয় নির্মল এক অক্সিজেনের কারখানায় এসেছি।
ঢাকা থেকে পরিবারসহ মোস্তফা জামান তার পরিবার নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে এসে বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। কিন্তু সুন্দবনের মতো এতো আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারকে আগে কখনও দেখিনি। যত দেখছি ততোই মন জুড়াচ্ছে, ভাবছি এতোদিনে কেন আসলাম না। আমি বললো যারা সুন্দরবনে আসেননি তারা সুন্দরের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছেন, যেমন আগে আমরাও ছিলাম।
কুয়েট শিক্ষার্থী আবির হোসেন বলেন, সুন্দরবনের যে বিশাল সম্পদ রয়েছে তার সুষ্ঠু ব্যবহার করা গেলে তাতে উপকূলের মানুষের মঙ্গল হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনের এবারের ঈদের ছুটিতে পর্যটক আগমনের সংখ্যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ছুটির দিনেও পর্যটকদের নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। টানা পাঁচ দিনের ছুটি ও বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকায় পর্যটক আসা এতো বেড়েছে বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা মনে করছেন।