পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পাশাপাশি সামগ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সরকার বিভিন্ন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সব সরকারি সংস্থা এবং নাগরিককে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য বাস্তুতন্ত্র এবং বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি পুনরুদ্ধার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আন্তর্জাতিক জৈববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে ২২ মে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও অন্যান্য সংকটাপন্ন বাস্তুসংস্থান সংক্রান্ত পরামর্শমূলক কর্মশালায়’ ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগদান করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) মো. মনিরুজ্জামান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন চৌধুরী।
কর্মশালায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতিসংঘ কনভেনশনের নির্বাহী সেক্রেটারি এলিজাবেথ মারুমা ম্রেমার ভিডিও বার্তাও উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে করণীয় নির্ধারণে বক্তব্য রাখেন।
পরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, জাতিসংঘ ২০২১-২০৩০ কে বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিপর্যয় ও মহামারি রোধে প্রকৃতির প্রতি অবিচার বন্ধ করার এখনই সময়। আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবসের এবারের গান ‘উই আর পার্ট অব দ্য সল্যুশন্স, ফর ন্যাচার’ মানব সভ্যতা ধ্বংস বন্ধের লক্ষ্যে বাস্তুসংস্থার পুনরুদ্ধারে কাজ করার বার্তা দেন তিনি।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত জাতীয় কমিটি হালদা নদীকে জীববৈচিত্র্য ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশের মোট স্থল ও অভ্যন্তরীণ জলভাগের পাঁচ শতাংশেরও বেশি সংরক্ষিত অঞ্চল এবং পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের প্রায় ৫ শতাংশ এলাকা সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। বেঙ্গল টাইগার, বাটাগুর বাসকা, লোনাপানির কুমির, শকুন, ঘড়িয়াল এবং গাঙ্গেয় ডলফিনের প্রজাতি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের মূল্যবান কৃষি-জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য জিন ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য অন্যতম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন ২০১৭ প্রণয়ন করেছে। জাতীয় জীববৈচিত্র্য স্ট্রাটেজি এবং অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৬-২০২১ গ্রহণ করা হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এসডিজি ১২, ১৪ এবং ১৫ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে এসডিজি অ্যাকশন প্লান বাস্তবায়ন করছে। সরকার বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।