Image default
বাংলাদেশ

স্বামী-শশুর আটক মিরসরাইয়ে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

মিরসরাইয়ে সেলিনা আক্তার মনি (৩৫) নামে এক গৃহবধূর গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে সেলিনার পরিবারের দাবী তাদের মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ মে) সকালে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার সাতভাইয়া বাড়ির রবিউল হোসেনের রান্না ঘর থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মর্গে প্রেরণ করেছে। এই ঘটনায় নিহত সেলিনার স্বামী আলতাফ হোসেন (৩৮) ও শশুর রবিউল হোসেনকে আটক করেছি পুলিশ। এবিষয়ে মিরসরাই থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জানা গেছে, আজ থেকে ৮ মাস পূর্বে সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার সাত ভাইয়ার বাড়ির রবিউল হোসেনের ছেলে আলতাফ হোসেনের সাথে মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর গ্রামের মকবুল আহম্মেদ বাড়ির মৃত সফিউল আলমের মেয়ে সেলিনা আক্তার মনির বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোভাবে সংসার করলেও এরপর থেকে সেলিনাকে বিভিন্ন সময় স্বামী মারধর করতো। সেলিনার মা মনোয়ারা বেগম প্রকাশ মনাধন বলেন, আমার মেয়ে বিয়ের পর থেকে ওই বাড়িতে শান্তি পায়নি। স্বামী-শশুর মিলে আমার মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন করতো। আমার মেয়ে ৩ মাসের অন্তসত্ত্বা ছিল। গত কয়েকদিন ধরে তাকে অনেকবার মারধর করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেলিনা ফোনে আমার আরেক মেয়েকে জানায়, তাকে (সেলিনা) ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে। না হয় স্বামী শশুর ওকে মেরে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত তাই করলো। আমার মেয়েকে খুন করে তাঁর লাশ ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। শুক্রবার সকালে ওই এলাকার মেম্বার আমার মেয়ে মারা গেছে বলে খবর দেয়। আমি থানায় মামলা করবো, আমার মেয়েকে যারা খুন করেছে আমি তাদের শাস্তি চাই। এবিষয়ে সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য এবাদুর রহমান বলেন, শুক্রবার ভোরে আলতাফের ভাই আমাকে তার ভাবি আত্মহত্যা করেছে বলে ফোন দেয়। আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি, তাদের রান্নাঘর তালাবদ্ধ। তালা খুলে দিলে ঘরে ঢুকে দেখি সেলিনার ঘরের তীরের সাথে সেলিনার লাশ ঝুলছে। তবে লাশের অবস্থা দেখে আমার কাছে আত্মহত্যা মনে হয়নি। এবিষয়ে মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাষ্টার বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে লাশের যে অবস্থা দেখেছি তাতে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে না। তারপরও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে হত্যা কি আত্মহত্যা। এবিষয়ে মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান রহমান বলেন, শুক্রবার সকালে মঘাদিয়া ঘোনা এলাকায় এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে ছুটে যাই। সেখান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। এরপর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করেছি। তিনি আরো বলেন, যতটুকু জেনেছি তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতেও স্ত্রীকে মারধর করেছে স্বামী আলতাফ। এই ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূ সেলিনার স্বামী আলতাফ হোসেন ও শশুর রবিউল হোসেনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা।

Related posts

নতুন নির্দেশনা সৌদিগামী বিমানের যাত্রীদের জন্য

News Desk

কুয়াকাটা সৈকতে পুণ্যস্নানে রাসপূজা সম্পন্ন 

News Desk

আ.লীগ নেতার ছোড়া চেয়ারের আঘাতে উপজেলা চেয়ারম্যান জখম

News Desk

Leave a Comment