জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে রাঙামাটি শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা ও দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে আটকা পড়েছেন পর্যটন শহর রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভোরে রাঙামাটিতে বেড়াতে এসেছিলেন তারা।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে শুক্রবার ও শনিবার হাতে রেখে রাঙামাটি আসেন কয়েক হাজার পর্যটক। অনেকে পূর্বের নির্ধারিত সময় অনুসারে এসেছেন বৃহস্পতিবার। আবার শুক্রবার ভোরেও পৌঁছান অনেকে। তবে শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রাঙামাটি ছেড়ে যেতে পারেননি তারা।
এদিকে, হঠাৎ যান চলাচল বন্ধের ঘোষণায় জেলার সাধারণ মানুষেরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শহরে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকে হেঁটে আবার কেউ কেউ মোটরসাইকেলে বাড়তি খরচ গুণে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা মো. আসিফ ও নজরুল বলেন, সকালে রাঙামাটি এসেছি। কিন্তু বিকাল পর্যন্ত কোথাও যেতে পারিনি। দুপুর পর্যন্ত রুমেই ছিলাম। বিকালে একটু হাঁটতে বের হয়েছি। এখন ঢাকায় কীভাবে ফিরবো এ নিয়ে চিন্তায় আছি।
আরেক পর্যটক আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এভাবে হঠাৎ সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে আমাদের। আমরা তো প্ল্যান করেই আসছি। সব এলোমেলো হয়ে গেলো। রবিবার কীভাবে ঢাকায় ফিরবো জানি না। কখন গাড়ি চলাচল শুরু হবে তাও জানি না। হঠাৎ তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়ে সবকিছু অস্বাভাবিক করে তোলা হলো। এখন সবকিছুর দাম বাড়বে।
হোটেল স্কয়ারের পার্কে বসে থাকা পর্যটক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, শুক্রবার সকালে এখানে এসেছি। সকাল থেকে হোটেলের রুমে ছিলাম। শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ, কোথাও যেতে পারছি না। এভাবে কয়দিন থাকতে হবে কে জানে। আবার ঢাকায় ফেরার ভাড়াও বাড়বে। সবকিছুর দাম বাড়বে। আমরা কোথায় যাবো।
হোটেল স্কয়ার পার্কের মালিক মো. নেয়াজ উদ্দিন বলেন, তেলের দাম বাড়ায় হঠাৎ শহরের একমাত্র যান অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বেড়াতে আসা পর্যটকরা হোটেলের রুমে শুয়ে, বসে, কেউ বাইরে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটাচ্ছেন। রবিবার ও সোমবার অনেক রুম বুকিং ছিল। সেগুলো দুপুরে বাতিল করেছেন পর্যটকরা।
তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি জহিরুল আনোয়ার বলেন, শহরে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় অনেক পর্যটককে সড়কে হাঁটতে দেখেছি। আমরাও তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছি। আর চলে যাওয়ার বিষয়ে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। পরিবহন চলাচল শুরু হলে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।