তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের এই অবরোধ কেউ মানছে না। রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া চলছে, অফিস আদালত খোলা। স্কুল-কলেজও খোলা। তারা কিছু কিছু জায়গায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষের মধ্যে ভয় সঞ্চার করা ছাড়া আর কিছু করতে পারেনি। মাঝখানে বিরতি দিয়ে দুই দিন পরপর তাদের এই হরতাল-অবরোধের কথা শুনে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে।’
শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের জামালখান সড়কে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের তত্ত্বাবধানে ডায়মন্ড সিমেন্ট ও দৈনিক আজাদীর অর্থায়নে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ’ শীর্ষক ম্যুরাল ও তথ্যচিত্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গত ১৪ জুন বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার সময় মিছিলকারীরা চট্টগ্রামের জামালখান সড়কের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের তথ্যচিত্রগুলো ভাঙচুর করে। সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। তারা এখন গাড়ি-ঘোড়া পোড়াচ্ছে, মানুষের ওপর আগুনসন্ত্রাস চালাচ্ছে। ওরা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত দেশ-জাতি, সমাজ ও জনগণের শত্রু। সুতরাং এদেরকে সবার চিহ্নিত করে রাখা দরকার। এরা যত দিন এভাবে ফণা তুলবে তত দিন দেশ ও সমাজ হুমকির মুখে থাকবে।’
সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পোড়ায়। হাসপাতালে হামলা চালায়। কোরআন শরীফ পোড়ায়, গাড়ি-ঘোড়া ও স্কুল ঘর পোড়ায়—ওরা কোনও রাজনৈতিক দল নয়। এগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচিও নয়। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়। আগুনসন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংলাপ করা যায় না। বরং তাদের নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর। যারা এই সমস্ত কথা বলেন তাদের কাছে প্রশ্ন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কি আলোচনা হয়? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হয়।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। তাদের অনুকরণে বিএনপি-জামায়াত পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। রাজনীতির নামে পেট্রোল বোমা দিয়ে আগুনসন্ত্রাস দুনিয়ার কোনও জায়গায় হয় নাই। আমরা যখন পাকিস্তান কিংবা পশ্চিমাদের অধীনে ছিলাম তখনও প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে দিয়ে বহু মিছিল গেছে, এসেছে। এ দেশের বায়ান্ন বছরের ইতিহাসে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন কিংবা জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা হয় নাই। যেটি বিএনপি-জামায়াত করেছে। সুতরাং এরা দেশ-জাতি এবং সমাজের শত্রু। এরা হিংস্র হায়েনা ও জঘন্য জানোয়ারের চেয়েও হিংস্র। সুতরাং এই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বাচ্চারা নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। এর মধ্যে একটি স্কুল ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। এই বাচ্চারা কি অপরাধ করেছে? আমাদের সরকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকেও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে—কেউ আগুন সন্ত্রাস চালালে কিংবা চালানোর উদ্যোগ নিচ্ছে এরকম জানতে পারলেও তাদের ধরিয়ে দেবেন। তাহলে এদেরকে নির্মূল করা সম্ভবপর হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য গত ১৪ জুন বিএনপি-জামায়াতের মিছিল থেকে এখানে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের চিত্রগুলো ভাঙচুর করা হয়। তারা ভাঙচুর করে শুধু ক্ষান্ত হয়নি, ভাঙচুর করার সময় তারা উল্লাসও করেছে। অর্থাৎ এগুলো ধ্বংস করে তারা উল্লসিত হয়েছে। আজকে আবার সেগুলোকে নতুন আঙ্গিকে স্থাপন করা হয়েছে।’
পুনঃস্থাপনের জন্য জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন এবং পৃষ্ঠপোষক ডায়মন্ড সিমেন্ট ও দৈনিক আজাদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংসই করতে জানে। এই ম্যুরাল ও ইতিহাস ঐতিহ্যের তথ্যচিত্রগুলো কি অপরাধ করেছিল। সেগুলো যে ভাঙচুর করলো? যদি জনগণের রায়ে আমরা আবার সরকার গঠন করতে পারি, এই দেশ থেকে শেষ আগুনসন্ত্রাসী পর্যন্ত নির্মূল করা হবে, ইনশাল্লাহ।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক।