কুড়িগ্রামের সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার প্রধান আশ্রয়স্থল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক রোগীসহ হাজারো মানুষের যাতায়াত। কিন্তু হাসপাতালে যাতায়াতের সড়কের অবস্থা বেহাল। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগী ও পথচারীদের। শুধু সড়ক নয়, হাসপাতালের প্রবেশপথ ঝুঁকিপূর্ণ। সড়কে ব্যবহৃত রড বের হয়ে প্রবেশপথটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রোগী ও তাদের স্বজনরা বলছেন, হাসপাতালে যাতায়াতের সড়কের যে অবস্থা, তাতে ঝাঁকুনিতে রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে বয়স্ক ও প্রসূতিদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গত কয়েক মাস ধরে বেহাল দশা চললেও সড়কটি মেরামতে সংশ্লিষ্টরা কোনও উদ্যোগ নেননি।
হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা সফিকুল বলেন, ‘শুধু হাসপাতাল নয়, একই সড়কে সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, যক্ষ্মা ক্লিনিক, মৎস্য অফিসসহ বেশ কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার রোগীসহ সাধারণ মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। কিন্তু সড়কটির এমন অবস্থা যে, এতে চলাচলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন।’
হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গেছে, এর নতুন ভবনের মূল প্রবেশপথের নির্মিত সড়কের ঢালাই উঠে রড বের হয়ে আছে। রডের সুচালো মাথা প্রবেশমুখে এমনভাবে বের হয়ে আছে, হাসপাতালে প্রবেশকারী মানুষের পায়ে আঘাত লেগে যেকোনো সময় জখম হতে পারে। এমনকি রিকশা কিংবা রোগী বহনকারী যানের চাকায় রড ঢুকে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীর সংলগ্ন কয়েকজন দোকানি জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবেশপথটি এমন ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও তা মেরামতের কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা অটোরিকশাচালক সাহারুল বলেন, ‘রডের মাথা যেমন করি বের হয়া আছে, তাতে কখন যে কার গাড়ির চাকা ফুটা হয়; তার কোনও ঠিক নাই। এগুলা দেখিয়াও ক্যা ঠিক না করে তাক কাই জানে।’
রিনা নামে এক নারী বলেন, ‘মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। তিন দিন ধরে আছি। দিনে কয়েকবার বাইরে যাওয়া-আসা করতে হয়। গেটের ওখানে রডগুলো এমন ভাবে বের হয়ে আছে, কখন পায়ে ঢুকে যায়। এগুলাতো দ্রুত ঠিক করে দেওয়া উচিত।’
প্রবেশপথ মেরামতের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীনুর রহমান সরদার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরে মূল ফটকের রড বের হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও সে বিষয়ে অবগত নন তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। এ নিয়ে গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে কথা বলবো।’
হাসপাতালের সামনের সড়কের বেহাল দশার বিষয়ে পৌর মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি মেরামতের টেন্ডার হয়েছে। দুই-চার দিনের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে।’