হিলি দিয়ে ঢুকছে অবৈধ পণ্য
বাংলাদেশ

হিলি দিয়ে ঢুকছে অবৈধ পণ্য

দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে আসা অন্তত ৩০-৪০ জন ভারতীয় যাত্রীর বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বিভিন্ন অবৈধপণ্য নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে হিলি বাজারে বিক্রি করে ভারতে ফিরে যাচ্ছে তারা।

অভিযোগ উঠেছে, চেকপোস্ট গেটে দায়িত্বরতরা কিছুটা নমনীয় থাকায় কাস্টমসের আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় রমরমা এই অবৈধ কারবার। এতে জড়িতদের বলা হয় ‌‘লাগেজপার্টি’। এছাড়া অন্য পাসপোর্ট যাত্রীদের দেশে ফেরার সময় তাদের পণ্যের সঙ্গে এই ব্যবসায়ীরা পণ্য ঢুকিয়ে দিচ্ছেন, যা দেশে তাদের মনোনীত ব্যক্তি সংগ্রহ করছেন। এক প্রকার প্রকাশ্যেই সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের সামনে দিয়েই এসব কারবার হচ্ছে।

লাগেজপার্টিরা যেসব ভারতীয় অবৈধপণ্য পাচার করে আনছে তার মধ্যে রয়েছে—শাড়ি, থ্রি-পিস, কসমেটিক্স সামগ্রী, মদ, বিয়ার, গাঁজা, চকলেট, বিস্কুট, মোবাইল ফোনসেট, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ, বিছানার চাদর ও কম্বল, চানাচুর, হরলিক্স, সাবান, স্যাম্পু, টুথপেস্ট, ডায়পার, জুস ও শনপাপড়িসহ নানা ধরনের পণ্য।

জানা গেছে, দুই বছর বন্ধের পর চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল করোনার বিধিনিষেধ উঠে যায়। এর ফলে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত শুরু হয়। আর এই সুযোগ নিয়ে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ও বালুরঘাটের অন্তত ৩০-৪০ জন চোরাকারবারী পাসপোর্টে বাংলাদেশি বি-শ্রেণির ভিসা (বিজনেস ভিসা) লাগিয়ে লাখ লাখ টাকার ভারতীয় অবৈধপণ্য হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে নিয়ে আসছে। আবার সেই পণ্য বাংলাহিলি বাজারে বিক্রি করে ওইদিনই বিকেলে বা সন্ধ্যায় ভারতে ফিরে যাচ্ছে। এই লাগেজপার্টিরা ১/২দিন পর পর বাংলাদেশে আসছে। লাগেজপার্টিরা ৩-৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে এই কার্যক্রম চালাচ্ছে। 

এসব পার্টি বেপরোয়া হয়ে ওঠায় সাধারণ পাসপোর্টযাত্রীরা চলাচলে হয়রানির শিকার হচ্ছে। আবার ভারতীয় লাগেজপার্টিরা ভারত থেকে বাংলাদেশি কোনও যাত্রী দেশে ফেরার সময় ব্যাগে জোরপূর্বক ভারতীয় অবৈধ মালামাল ঢুকিয়ে দিচ্ছে। পরে বাংলাদেশি যাত্রী দেশে প্রবেশ করা মাত্রই ভারতীয় লাগেজপার্টিরা তাদের এপারের এজেন্টকে ফোন করে যাত্রীর নাম বলে দিলে ব্যাগ থেকে মালামাল বের করে নিচ্ছে।

সম্প্রতি ভারত থেকে দেশে ফেরা এক যাত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘আমি ভারতে চিকিৎসা শেষে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরছিলাম। ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সম্পন্ন করে এবং সীমান্তে বিএসএফের চেকিং প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করি। এ সময় আমার যে কয়টি ব্যাগ ছিল, তার সঙ্গে পণ্যভর্তি দুটি কালো পলিথিনের ব্যাগ ভারত থেকে কে যেন দিয়ে দেয় আমাকে না জানিয়ে। পরে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে এক ব্যক্তি এসে সেই ব্যাগ নিয়ে চলে যায়।’

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ এসএম নুরল আলম খান জানান, ‘কাস্টমসের ব্যাগেজ বিভাগে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাদেরকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া আছে, যাতে ব্যাগেজ সুবিধা বহির্ভূত কোনও পণ্য শুল্ককর ছাড়া কেউ বের হতে না পারে। এক্ষত্রে আমরা খুবই সতর্ক রয়েছি। যদি কেউ এ ধরনের পণ্য নিয়ে যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত স্বাপেক্ষে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে আমাদের কেউ জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Source link

Related posts

চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১০ জনের মৃত্যু

News Desk

করোনার টিকার বয়সসীমা ১৮, শিগগিরই বাস্তবায়ন

News Desk

রাতে হতদরিদ্র, সকালেই ৩৫ লাখ টাকার সম্পদের মালিক!

News Desk

Leave a Comment