ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে লাগা আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। এ আগুনে হাসান (১২) নামে এক কিশোর মারাও গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও তিন জন। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার প্রতাপগঞ্জ বাজারে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া হাসান বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার চরেরকান্দা গ্রামের আব্দুর রহমানের সন্তান। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত তিনি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুর ২টার দিকে বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার প্রতাপগঞ্জ বাজারের মুসা মার্কেটের হোসেন মিয়ার খাবারের হোটেলের গ্যাসের চুলা লিকেজ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দোকানের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের লেলিহান মুহূর্তেই আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর ও কুমিল্লার হোমনা ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বিকাল সাড়ে ৪টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এদিকে, আগুনে জাহিদুল ইসলাম নামে এক কিশোর, আগুন নেভাতে গিয়ে আমির হোসেন (৪৫ ) ও দীন ইসলাম (৩৫) নামে দুই জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জাহিদুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি দুই জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম তাজ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ অর্থসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়েছেন।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বর্মন বলেন, ‘হাসান ও জাহিদুল ইসলাম নামে দুই কিশোরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। হাসানের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এতে শ্বাস নিতে না পেরে তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া জাহিদুলের নামে অপর কিশোরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।’
বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার মেয়র তফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। আগুনে তিন থেকে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি রাজু আহমেদ বলেন, ‘আগুনে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিন জন। এ ছাড়া একটি হার্ডওয়্যারের দোকান, দুটি হোটেল, একটি বিরিয়ানি, ওষুধ, একটি যন্ত্রপাতিসহ ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নগদ সাত হাজার টাকা ও দুই বান্ডিল করে টিন দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে চার বান্ডিল টিন, নগদ ১০ হাজার করে টাকা ও আহতদেরকেও চিকিৎসার জন্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’