বান্দরবানে পাহাড় কেটে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে নতুন একটি ইটভাটা। কৃষিজমি, জনবসতি, প্রাকৃতিক ও সামাজিক বন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এটি। কোনও ধরনের প্রশাসনিক অনুমতি না নিয়ে রুমা সদরের পলিকা পাড়ায় ইটভাটাটি তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ একর পাহাড় ও জমির মাটি কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। এখন চলছে ইট তৈরির চুল্লি ও চিমনি বসানোর কাজ। ভাটাটি তৈরি করেছেন মো. নুরুজ্জামান মিলন ও ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ। তবে তারা প্রশাসনের মৌখিক অনুমোদন নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিস্তারিত কোনও কথা বলতে রাজি হননি তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রুমা সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরে পলিকা পাড়া। পাড়া থেকে এক কিলোমিটার পর ১০ একরের বেশি পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। পাহাড়ের মাটি নিয়ে যাচ্ছে কয়েকটটি ডাম্প ট্রাক। মাটিগুলো পাশেই জমানো হচ্ছে ইট তৈরির জন্য। পাশেই চলছে চুল্লি তৈরি ও চিমনি বসানোর কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দরা জানিয়েছেন, পলিকা পাড়া অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও পাড়ার পাশে গড়ে উঠছে ইটভাটা। নতুন ইটভাটা নির্মিত হলে এর বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হবে। পাশাপাশি ইটভাটার গাড়ি চলাচলের কারণে পাশের সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইটভাটা চালুর আগেই এটি বন্ধ করা উচিত। সেইসঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
পাড়ার কারবারি সাপ্রু অং বলেন, ‘আমরা পাড়ার পাশে ইটভাটা চাই না। এতে আমাদের পাড়ার পরিবেশ ও রাস্তাঘাট নষ্ট হবে। আমরা চাই ইটভাটা নির্মাণকারী মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
পাড়ার বাসিন্দা অংক্য মারমা বলেন, পলিকা পাড়াটি অনেক সুন্দর। এখানে কৃষি জন্মায়। ইটভাটা নির্মিত হলে পরিবেশ ও কৃষি ধ্বংস হবে। তাই ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
বান্দরবান পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ইটভাটা তৈরির বিষয়টি আমি দুই-তিন আগে শুনেছি। এখনও চিমনি না বসানোর কারণে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে পাহাড় ও মাটি কাটার বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো আমরা।’
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘সেখানে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতির খবর পেয়ে ভাটামালিকসহ সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যাওয়ায় কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে লাইসেন্স দেখাতে না পারলে ওখানে ইটভাটা না করতে বলা হয়েছে তাদের। কোনোভাবেই সেখানে নতুন ইটভাটা করতে দেওয়া হবে না।’