দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ শহরে আসছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন দুপুর আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নির্বাচনি সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখবেন। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ইশদাইর এলাকায় অবস্থিত এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। এর আশেপাশে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। পুরো মাঠজুড়ে চেয়ার পেতে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা নানা দিক দেখভাল করছেন। স্টেডিয়ামের আশপাশে নেতৃবৃন্দদের বড় বড় ছবিসংবলিত ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের বাইরের সড়ক ও পুরো শহর পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ শহরে অবস্থিত এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নানা প্রস্তুতি চলছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যসহ দলের নেতৃবৃন্দরা একে একে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দলের নেতাকর্মীরা দুপুর ২টার মধ্যে শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হবেন। আমরা বিশ্বাস করি, সেদিন স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ হবে। এই স্টেডিয়ামে ঈদের জামাতে এক লাখ ২৫ হাজার লোক নামাজ পড়তে পারেন। সে হিসাবে আড়াই লাখ লোকের জায়গা হবে। পাশাপাশি রাস্তাও আছে। এখানে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন। এ ছাড়া জেলা ও মহানগরের সভাপতি, মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ আমরা একসঙ্গে সমাবেশ মঞ্চে থাকার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মায়ের মতো। তার কাছে আমাদের সকল আবদার পূরণ হয়। এবারও তার কাছে জেলাবাসী হিসেবে আমাদের চাওয়া থাকবে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, ‘দলীয় সভাপতির আগমনে জেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিটি স্তরে নতুন করে উৎসাহের সৃষ্টি হবে। যেটি আগামী দিনে দলীয় কার্যক্রমে সহায়ক হবে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে সকল ধরনের নিরবচ্ছিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এক নির্বাচনি জনসভায় নারায়ণগঞ্জ শহরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরে বিগত ১৫ বছরে আর নারায়ণগঞ্জ শহরে আসেননি তিনি। তবে জেলার বিভিন্ন স্থানে সমবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরগুলোতে সরকারের নানান প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার লাগোয়া রূপগঞ্জ উপজেলায় ৩ বার এসেছেন। তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আড়াইহাজার উপজেলায় উপস্থিত থেকে জেলার অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিকালে আড়াইহাজার উপজেলায় শহীদ মঞ্জু স্টেডিয়ামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সমাবেশ থেকেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।