২৬ টাকার তরমুজ খুচরা বাজারে ১৫০
বাংলাদেশ

২৬ টাকার তরমুজ খুচরা বাজারে ১৫০

বরিশাল নগরীর পোর্টরোড মৎস্য আড়ত এবং পোর্ট রোড খালের দিকে তাকালে চোখে পড়বে তরমুজ আর তরমুজ। একইভাবে সড়কের দিকে তাকালেও একই চিত্র চোখে পড়ে। সেখানে সারি করে রাখা ট্রাকে তোলা হচ্ছে তরমুজ। এ ছাড়া ভ্যান থেকে শুরু করে সড়কের ফুটপাত এবং বাজারগুলোতে বেচাকেনা চলছে তরমুজের। যেখানেই চোখ যায় সেখানেই তরমুজের বেচাবিক্রি। তবে ভালো ফলন হলেও দাম নাগালের মধ্যে নেই।

পোর্ট রোড খালে প্রতিদিন জেলা থেকে শুরু করে বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে তরমুজ আসছে। সরাসরি ক্ষেত থেকে তরমুজ কেনার পর তা ট্রলারযোগে আসছে বরিশাল। এরপর বিভিন্ন যানে বরিশাল থেকে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

বাকেরগঞ্জ উপজেলায় এ বছর তরমুজের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। সেখানকার কৃষক কবির মৃধা বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ১৬ হাজার টাকায় ক্ষেতের ছোট-বড় ৬শ’ তরমুজ বিক্রি করেছেন। এতে একটি তরমুজের দাম পড়েছে ২৬ টাকার কিছু বেশি। ওই তরমুজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে দেড়শ টাকায়।’ পরিবহন ব্যয় থেকে শুরু করে শ্রমিক ও আড়তদারি খরচ যুক্ত হওয়ায় দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন একাধিক আড়তদার।

কৃষক কবির জানান, এ বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তার ক্ষেতে সর্বনিম্ন ৫ কেজি থেকে ১২ কেজি ওজনের তরমুজের ফলন হয়েছে।

ভোলার চাষি মোতাহার মুন্সি জানালেন, ভোলার কিছু এলাকায় তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে এ বছর। তিনি একশ তরমুজ তিন হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা দরে। সেগুলোর বেশির ভাগ মাঝারি সাইজের, ওজন তিন থেকে পাঁচ কেজি হবে।

পোর্ট রোডের আড়তদার মোবারক আলী বলেন, ‘বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ, ভোলা, পটুয়াখালী থেকে ট্রলারযোগে তরমুজ আসছে। এক-একটি ট্রলারে পাঁচ হাজারের বেশি তরমুজ আনতে পারেন ব্যবসায়ীরা। তবে যারা ট্রলারযোগে তরমুজ আনছেন তারা মধ্যস্বত্বভোগী। তারা যেসব এলাকায় তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে সেখানে গিয়ে সরাসরি ক্ষেত থেকে কৃষকের কাছ থেকে তরমুজ কিনছেন। এরপর তাদের পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে শ্রমিক ও ঘাট মজুরি খরচ দিতে হচ্ছে। এতে আড়তে আসার পর চার-পাঁচ কেজি ওজনের প্রতিটি তরমুজের দাম পড়ছে একশ টাকার উপরে। সেখান থেকে আবার আড়তদাররা ব্যবসা করছেন। এভাবে বিভিন্ন হাত ঘুরে সেই তরমুজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকায়।’

রংপুর থেকে আগত ব্যবসায়ী ইমান আলী বললেন, ‘বরিশাল অঞ্চলে এ বছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে শুনে ছুটে এসেছিলাম। কিন্তু এখন যে দামে কিনতে হচ্ছে তাতে প্রতিটি তরমুজ ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও খরচ উঠবে না।’ এ জন্য তিনিও ট্রলার ও ট্রাকভাড়া বৃদ্ধিকে দায়ী করলেন।

তবে এ বছর প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকায় কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে কেউ সাহস পাচ্ছে না। পিস হিসেবেই বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। রোজা ও অতিরিক্ত গরমের কারণে তরমুজের দাম বেশি বলে জানালেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

কৃষি অধিদফতরের বরিশাল জেলার উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ বছর বরিশাল জেলায় তরমুজ উৎপাদনের টার্গেট ছিল ৫শ’হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ৬শ’ ৪৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩৫ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। এখন চলছে প্রথম পর্যায়ে কর্তন। এরপর আরও দুই থেকে তিনবার তরমুজ কাটা হবে।’

 

Source link

Related posts

৩৭১ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন ২১ জুন

News Desk

ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ছিনতাই, একদিনের মধ্যে উদ্ধার করলো পুলিশ

News Desk

ধীরে ধীরে বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে: ব্রিটিশ হাই কমিশনার

News Desk

Leave a Comment