করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে বন্ধ হওয়ার প্রায় দুই বছর পর আবারও কুড়িগ্রাম-রমনা রেলপথে ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ কর্তৃপক্ষ। আগামী ১ মার্চ থেকে এই রেলপথে একটি কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাটের ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিন্টেন্ডেন্ট খালিদুন নেছা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ২০২০ সালের মার্চে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয় যায়। তখন থেকে কুড়িগ্রাম-রমনা রেলপথে চলাচলকারী একমাত্র রমনা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ আছে। পরে দেশের সব রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও লোকোমাস্টার ও ইঞ্জিন স্বল্পতা এবং জনবল সংকটের অজুহাতে এই রেলপথে দীর্ঘ দুই বছর ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। আগামী মার্চে কমিউটার ট্রেন নামে রেল যোগাযোগ চালুর উদ্যোগ নিলেও, রমনা লোকাল ট্রেনটি আপাতত চালু হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রেলপথ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নতুন চালু হওয়া কমিউটার ট্রেনটি বিকালে লালমনিরহাট-কাউনিয়া-কুড়িগ্রাম-কাউনিয়া-রমনা এবং সকালে রমনা-কুড়িগ্রাম-কাউনিয়া-রংপুর-লালমনিরহাট রেলপথে যাতায়াত করবে।
রেল, নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও রেলপথ আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাদের বলেন, ‘এটা মূলত রংপুর এক্সপ্রেসের সংযোগকারী শাটল ট্রেনটিকে কমিউটার ট্রেন নামে চালানোর একটি উদ্যোগ মাত্র। যে শিডিউলে এটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা এই এলাকার সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার শামিল।’
‘আমরা পার্বতীপুর পর্যন্ত ট্রেন চাই। বন্ধ হয়ে যাওয়া রমনা লোকালটি পুনরায় চালু করা হোক। কমিউটার নামে ট্রেনটি যে টাইম শিডিউল নিয়ে চালু হতে যাচ্ছে তাতে যাত্রী সংকটের অজুহাতে কয়েকদিন পর আবারও বন্ধ করার হীন উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ সকালে যেসময় ট্রেনটি কুড়িগ্রাম ছেড়ে যাবে তার কিছু সময় আগে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়। যাত্রীরা রংপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে যেতে পারবেন। তাহলে কমিউটারে চড়বে কে?’ যোগ করেন রেল আন্দোলনের এই নেতা।
একই সঙ্গে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে ট্রেনের যাত্রীবান্ধব সময়সূচি নির্ধারণের দাবি জানান তিনি।
ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিটেনডেন্ট খালিদুন নেছা বলেন, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমরা রমনা রেলপথে কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখনও শিডিউল চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু এখনও পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে পর্যালোচনা ও সমন্বয় করেই কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কুড়িগ্রাম-রমনা রেলপথে ট্রেন চালুর পর পর্যায়ক্রমে ওই রেলপথটি সংস্কারও করা হবে।