নীলফামারীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ‘প্রয়াত পল্লীবন্ধু প্রেসিডেন্ট এরশাদের লাঙ্গল প্রতীক হারিয়ে যায়নি। আমরা আর কারও সঙ্গে জোটবেঁধে নির্বাচন করবো না। সারা দেশের মানুষ যেহেতু জাতীয় পার্টির সঙ্গে আছে তাদের নিয়ে এবার ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে।’
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকালে নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পল্লীবন্ধু সারা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে গেছেন। তারই পথ ধরে আওয়ামী লীগ কিঞ্চিৎ উন্নয়ন ঘটিয়েছে। বর্তমান সরকার দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বন্দি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা আবার পুরাতন আইন নতুন মোড়কে চালু করে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।’
জিএম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে দেখেছে সুশাসন দিতে। উন্নয়নের এ শুভ সূচনা জাতীয় পার্টির মাধ্যমেই শুরু হয়েছে। আজকে যে রাস্তায় পিচঢালা হচ্ছে তা জাতীয় পার্টিই করেছে। এরশাদ সাহেবের হাত ধরেই হয়েছে।’
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জন্য বিপদজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য বিপদজনক একটা প্ল্যান্ট। আমি মনে করি, এখানে বাংলাদেশের কোনও কন্ট্রোল থাকবে না। আমি এর আগেও বলেছিলাম, সরকার যেভাবে মেগা প্রজেক্ট করছে, যেভাবে প্রকল্প করছে, যেভাবে দুর্নীতি করছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা বাংলাদেশের মানুষকে রক্তশূন্য করে গায়ে গহনা পরিয়ে দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার এই প্রজেক্ট করার পর আমার মনে হয়েছে শুধু রক্তশূন্যই না, আপনার লিভার, কিডনি এগুলো কেটে নিয়ে তারা বিক্রি করছে। এমন একটি দেহ থাকছে আপনার যেখানে কিডনি নাই, লিভার নাই, ভেতর থেকে আপনার সবকিছু বের করে নেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের একটি দেহ আমাদের বাংলাদেশে অবশিষ্ট থাকছে। এর কারণ হলো, দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই, সরকার কোনও গণতন্ত্র দেয় নাই।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপি একই। আমাদের বোঝা শেষ। চারবার জাতীয় পার্টিকে দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে। সেই সুযোগ এবার দেওয়া হবে না। যারা জনগণের কথা ভাবে না তাদের দরকার নেই। জনগণ এখন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ভাবছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। একটি ডিমের দাম এখন ১৭ টাকা। দেশের মানুষ কীভাবে চলবে?’ বাণিজ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত জিনিসের দাম বাড়ছে। তুমি কেন বসে থাকো। তোমার পদত্যাগ করা উচিত।’
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য এনকে আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাজ্জাদ পারভেজের পরিচালনায় দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর মাসুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাজমা আক্তার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান এমপি, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক রশিদুল ইসলাম, সিদ্দিকুল আলম প্রমুখ।