সব শ্রেণির ক্রেতার প্রতিদিনের বাজার তালিকায় থাকে আলু। তরকারির সঙ্গে আলুর মিশেল বাঙালিয়ানা রান্নার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সেখানে আলুর বাজারের দামই চড়া। বাজারে গিয়ে রীতিমতো ঘাম ঝরছে ক্রেতাদের। পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কেনার অজুহাতে চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। বাজার মনিটরিংয়ে নিয়োজিত ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক নিত্য জরিমানা হলেও মানা হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত মূল্য। এবার বগুড়ায় আলুর বাজার সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। খুচরা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শহরের রাজাবাজারে প্রশাসনের সহযোগিতায় এ দামে আলু বিক্রি শুরু হয়। এতে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে পাকরিসহ অন্যান্য আলু ৫০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শনিবার সকালে আর বি কোল্ড স্টোরেজ থেকে ১২ মেট্রিক টন স্টিক আলু শহরের রাজাবাজারের ১৬ জন খুচরা ব্যবসায়ীকে সরবরাহ দেওয়া হয়। দাম ধরা হয় প্রতি কেজি ৩০ টাকা। এরপর থেকে ক্রেতারা প্রতি কেজি ৩৬ টাকায় কিনতে পারছেন। তবে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি আলু নিতে পারছেন।
সূত্রটি আরও জানায়, বগুড়ায় ৩৬টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ থেকে রাজাবাজারে খুচরা আলু বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হবে।
দুপুরে শহরের রাজাবাজারের কয়েকজন আলু বিক্রেতা জানান, গত শুক্রবার তারা খুচরা ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন। শনিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কোল্ড স্টোরেজ থেকে পাইকারি ৩০ কেজি দরে সাধ্যমতো আলু কিনেছেন। এরপর সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তবে তাদের কেজি প্রতি এক থেকে দুই টাকার বেশি লাভ হচ্ছে না। কারণ, আলুর মধ্যে পচা ও দাগি থাকছে। এছাড়া একজন ক্রেতার কাছে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজির বেশি বিক্রি করতে নিষেধ রয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, ক্রেতাদের কারণেই বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সংকট সৃষ্টি হয়। কারও দিনে এক কেজি লাগলে তিনি ৩-৪ কেজি কিনে থাকেন।
আলু কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতা জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে কম দামে আলু বিক্রি হওয়ায় তারা খুশি হয়েছেন। প্রতি কেজি আলু ৬-৮ টাকা কম দামে কিনতে পারছেন। অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। ক্রেতারা আশা করেন, প্রশাসনের এমন তদারকি অব্যাহত থাকলে বাজার দর নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বগুড়া রাজাবাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আর বি কোল্ড স্টোরেজের মালিক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজারে ৩৬ টাকা কেজি দরে স্টিক আলু বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের তার হিমাগার থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে আলু সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা ওই আলু ৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। ফলে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে পাকরিসহ অন্যান্য আলুর দাম আগের মতো আছে।’