Image default
বাংলাদেশ

৫০ বছর ধরে সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন নেত্রকোনার ২০ গ্রাম

স্বাধীনতার পর থেকেই নেত্রকোনার বারহাট্টার কাওনা নদীর ওপর নেই কোনো সেতু। ফলে এখানে ২০ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। জানা যায়, উপজেলার আসমা বাজার থেকে গোড়ল সড়কে অবস্থিত কাওনা নদী। ৫০ বছর ধরে স্থানীয় ব্যক্তিরা এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখনও বাস্তবায়ন হয়নি তাদের এ দাবি। স্থানীয়রা জানান, বারহাট্টার আসমা ইউনিয়নের মনাস বাজার থেকে একটি পাকা সড়ক গোড়ল এলাকা হয়ে কলমাকান্দার দশধার ও আমবাড়ি সড়কে মিশেছে। ওই পথ দিয়ে গাবারকান্দা, দেওপুর, বাউসী, হাজিগঞ্জ, শেখেরপাড়া, ছয়গাওসহ অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন।

গোড়ল গ্রামের বাসিন্দা আবু সাদেক খান (৫৭) বলেন, ‘নদীর পশ্চিমপাড় এলাকায় গোড়ল, বড় ভিটা, হাওতলা, গাভারকান্দাসহ ২০টি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে উপজেলা সদর থেকে। উপজেলা সদর ও বিভিন্ন হাটবাজারে আসা-যাওয়ার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কষ্ট করে এ সাঁকো দিয়েই পার হন। সেতু নির্মাণের জন্য চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী সবার কাছেই সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ সেতু করে দেয় নাই।

বারহাট্টা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সম্রাট খান (৩৪), নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালেহীন (১৪) ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল মোমিন (৯) জানান, এলাকায় অনেক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয়। দুর্ঘটনায় অনেকেই আহত হন। কিন্তু এরপরও এখানে কেউ সেতু করে দেয়নি। একটি সেতুর কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে ২০টি গ্রাম। সেতুর অভাবে ধান-চাল আনা-নেওয়া যায় না। রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে সহজে হাসপাতালে নেয়া যায় না। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে শত শত মানুষ।

ছয়গাঁও গ্রামের নজরুল (৫২) বলেন, ‘কাওনা নদীর পূর্ব পাড় এলাকার ছয়গাঁও, মনাষ ও উজানগাঁও গ্রামের মানুষ গোড়ল সাঁকো ব্যবহার করে। অনেকেরই জমি নদীর পশ্চিমপাড় এলাকায়। সেতু না থাকায় ফসল আনা যায় না। ক্ষেতেই কম মূল্যে বেচতে হয় ফসল। গোড়ল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, ‘নদীর ওপর প্রায় ৬০ ফুট দীর্ঘ নড়বড়ে এ সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের মতো মানুষের চলাচল করে। এলাকাবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রতিবছর সাঁকো মেরামত করা হয়।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার আজাদ বলেন, ‘কাওনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কাওনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হক বলেন, ‘বর্তমান সরকারের গ্রাম হবে শহর- এ স্লোগান বাস্তবায়নে কাজ করছি। উপজেলা সমম্বয় কমিটির সভায় কাওনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই সেতু নির্মাণ ও এলাকার মানুষের দুর্দশা শেষ হবে।

Related posts

সুনামগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা, ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

News Desk

বদলেছে চিত্র, যানবাহনের অপেক্ষায় থাকছে ফেরি

News Desk

কাউকে ছাড় দেবো না, যেকোনও মূল্যে অপরাধী দমন করবো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment