ময়মনসিংহের ত্রিশালে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ৫৫ মণ ওজনের ‘কালো মানিক’। তাকে দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ। গায়ের রঙ আর বিশাল দেহের কারণে মালিক নাম দিয়েছেন কালো মানিক। দাম হাঁকছেন ৪০ লাখ টাকা। মালিকের ভাষ্যমতে, জেলার সবচেয়ে বড় গরু হওয়ায় আলোচনায় রয়েছে কালো মানিক।
ঈদুল আজহা যতই ঘনিয়ে আসছে কোরবানির পশু নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে ততই আগ্রহ বাড়ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর দাম, ওজন ও বাহারি নাম নিয়ে চলছে আলোচনা। আর এ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ত্রিশালের ষাঁড় কালো মানিক। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে কালো মানিকের নাম।
ছয় বছর আগে স্থানীয় বাজার থেকে ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড় ৭৫ হাজার টাকায় কিনেছেন ত্রিশাল উপজেলার ধানিখোলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাটিপাড়া গ্রামের খামারি জাকির হোসেন সুমন (৪৫)। শখ করে গরুটি লালনপালন করেছেন। দুই বছর লালনপালনের পর গরুটির উন্নতি দেখে বড় করার সিদ্ধান্ত নেন। রঙের সঙ্গে মিল রেখে নাম রাখেন কালো মানিক। পাঁচ বছরের মাথায় গত কোরবানির ঈদে কালো মানিকের দাম উঠেছিল ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু এ দাম সুমনের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। এ জন্য বিক্রি করেননি। কালো মানিকের এখন দৈর্ঘ্য ১১ ফুট আর প্রস্থ সোয়া সাত ফুট। যার লাইভ ওজন ২২০০ কেজি। সুমন এবার কালো মানিকের দাম চাচ্ছেন ৪০ লাখ টাকা।
জাকির হোসেন সুমন বলেন, ‘কালো মানিককে লালনপালনে যে খরচ হয়েছে, তা কেউ দিতে পারবে না। কারণ যত্নের দাম হয় না। ময়মনসিংহ অঞ্চলে এটি সবচেয়ে বড় গরু। ৪০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারলে কিছুটা লাভবান হবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গরুটি বিদেশি জাতের হলেও সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে খড়, খৈল, ভুসি, ভুট্টা ও ঘাস খাইয়ে বড় করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কালো মানিকের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন এলাকার বেপারি এবং ক্রেতাসহ সাধারণ মানুষ গরুটি দেখতে আসছেন। অনেকে বিভিন্ন অঙ্কের দাম বললেও স্থানীয় এক বেপারি ২৫ লাখ টাকা বলেছেন।’
জাকির হোসেন আরও বলেন, ‘কালো মানিক আকারে বড় এবং ওজনে বেশি হওয়ায় হাটে উঠানো সম্ভব হবে না। বাড়ি থেকেই ক্রেতারা কালো মানিককে কিনতে পারবেন। কালো মানিককে দেখে আশপাশের যুব সমাজ গরু লালনপালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, ‘কালো মানিক লালনপালনের মাধ্যমে জাকির হোসেন সুনাম কুড়িয়েছেন। তাকে এখন এলাকার সবাই চেনেন। সেইসঙ্গে এলাকার নামও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। বিভিন্ন এলাকার মানুষ কালো মানিককে দেখতে ভিড় করছেন, মোবাইলে ছবি তুলে রাখছেন।’
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় কোরবানির হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও গরু কেনাবেচার সুযোগ রয়েছে। হাটগুলোতে থাকবে প্রাণিসম্পদ বিভাগের মেডিক্যাল টিম।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক ডা. মনোরঞ্জন ধর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় খামারি এবং কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। কোরবানিতে পশুর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার। অতিরিক্ত প্রায় দুই লাখ পশু বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যাবে।’