বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম শিক্ষার্ধীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আগামীর যে বাংলাদেশ হবে, সেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই, ওই সংসদে গিয়ে আপনি একজন এমপি হবেন, একজন মন্ত্রী হবেন, একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আপনাদের ওই সংসদে একজন পলিসি মেকার হিসেবে যেতে হবে। কারণ, সবকিছু হয় সংসদ থেকেই এবং সব পলিসি মেকিং হয় ওই সংসদ থেকে। টাঙ্গাইলের এই মেধাবী তরুণ প্রজন্ম যদি সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে তাহলে কারা করবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, ‘আপনারা অভিভাবকরা যেমন স্বপ্ন দেখতেন, আপনার ছেলে শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, ম্যাজিস্ট্রেট হবে– তেমনি আপনি স্বপ্ন দেখবেন, আপনার ছেলে দেশের অন্যতম সেরা একজন রাজনীতিক হয়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি, অন্য ফ্যাসিস্টকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নয়। কেউ যদি এখনও শয়নে-স্বপনে কিংবা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে আবারও ছাত্র-জনতাকে ডমিনেট করে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে; তারা যেন ওই শেখ হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নেয়।’
সারজিস আলম বলেন, ‘আমার ভাই যখন রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে, তখন সেই হামলাকারী কতিপয় পুলিশ কীভাবে উন্মুক্ত রাস্তায় ঘোরাফেরা করে। ওই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, চাটুকার, তেলবাজ তোষামদকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য রয়েছেন তারা যদি নিজেদের শুধরে না নেন তাহলে তাদের নেত্রী হাসিনার মতোই দেশত্যাগ করতে হবে।’
সরকারি অফিসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে সারজিস বলেন, ‘ভূমি অফিস, হাসপাতালসহ সরকারি দফতরে দালালি আর টাকা দিয়ে কাজ করার জন্য; জনতার বিনামূল্যে ওষুধ বিক্রি করার জন্য ছাত্র-জনতা এই অভ্যুত্থান ঘটায়নি।
‘বাংলাদেশে বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি করেছেন– তিনি তার আওয়ামী লীগকেই শুধু ফ্যাসিস্ট বানাননি; তিনি শুধু বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট বানাননি; তিনি ফ্যাসিস্ট বানিয়েছেন আমাদের প্রত্যেকটি মানুষকে। এই জায়গা থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন– ঢাকার সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন, মোবাশ্বিরুজ্জামান হাসান, মিতু আক্তার, রাকিবুল হাসান, রফিকুল ইসলাম আইনী ও ইলমা খন্দকার অ্যানি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টাঙ্গাইলের শিক্ষার্থী ইতাত রায়ছা নোহা।
অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে সারজিস আলম সমাবেশে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সেলফি তোলেন।