উজানের ঢল কমে যাওয়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সদর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পানি নামছে। তবে এখনও অনেক ঘরবাড়িতে পানি জমে আছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির কারণে বানভাসিদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট এখনও বানের পানিতে ডুবে আছে। পানিতে লেপ-তোশক ও আসবাবপত্রসহ নানা জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ শহরের শান্তিবাগ নুতনপাড়া কালীপুর, সুলতানপুর ও বড়পাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চলে এখনও বানের পানি আছে।
শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা স্বপন কর্মকার বলেন, ‘বানের পানিতে আমাদের হাড়ি-পাতিল, লেপ-তোশক, চাল-ডাল সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনও ত্রাণ সামগ্রী পাইনি।’
একই এলাকার নিবেদন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার ঘরে সব জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। সরকারি সাহায্য ছাড়া ঘর তৈরি করতে পারবো না। পরিবারের ৫ জন সদস্য নিয়ে আমরা অন্যের বাড়িতে আছি। ঘরে যাওয়ার কোনও উপায় নেই।’
পিংকি দাস বলেন, ‘বন্যার কারণে রোজগার বন্ধ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে আমাদের। এখনও অনেকের মতো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছি। বাড়িতে পানি থাকায় ফিরতে পারছি না।’
এদিকে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা, যাদুকাটা, চলতি, রক্তি, বৌলাই খাসিয়ামারা নদীর পানি কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সুরমা নদীর পানি কমায় অন্য নদীর পানি কমছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। চাল, ডাল, তেল, আলু ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। যাদের ঘর ভেঙে গেছে তাদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা করা হচ্ছে।’