Image default
বাংলাদেশ

ইসির বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে তিনটায় ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। এ মেয়াদকালে তাঁদের দায়িত্ব কীভাবে মূল্যায়ন করবেন—প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন চরমভাবে ব্যর্থ। বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার হওয়া উচিত।

কমিশনের বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘এটা চিন্তা করে দেখব।’ একটু থেমে তিনি বলেন, ‘মামলা করে তো কোনো লাভ হয় না। কারণ, বিচার বিভাগও এখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না।’

এ সময় ইসি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইসি গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের ব্যাপারে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। কারণ, এসবের কোনো মূল্য নেই। এসব অর্থহীন। যাকে সার্চ কমিটির প্রধান (বিচারপতি ওবায়দুল হাসান) করা হয়েছে, তাঁর বাবা ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত গণপরিষদ সদস্য। তাঁর ছোট ভাই ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব। কমিটির আরেক সদস্য ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁদের কাছে তো নিরপেক্ষতা আশা করার কোনো কারণ নেই।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপি কী ভাবছে—প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়ে গেল। কোনোটাই নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগ যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, তত দিন তারা নির্বাচন কমিশনকে দখলে রাখবে। তারা তাদের মতো করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গোলাগুলি হয়েছে। শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এটাও কোনো নির্বাচনই হয়নি। নির্বাচনব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা চলে গেছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি এখানে কোনো ইস্যু নয়। ইস্যু হলো নির্বাচনকালীন কোন সরকার ক্ষমতায় থাকবে? এটা যদি দলীয় সরকার থাকে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার যদি থাকে, তবে কখনোই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের ইচ্ছা নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ইসির পরিচালনায় নির্বাচন দিতে হবে। তখনই এ সমস্যার সমাধান হবে। সব দলের মতামত উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে, দেশের জনগণ কখনোই তা মেনে নেবে না। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে বারবার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। এ অধিকারের জন্য মানুষ প্রাণও দিয়েছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি আবু তাহের, নুর ই শাহাদৎ, ইউনুস আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, আনসারুল হক, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Related posts

দেড় বছর ধরে কবরস্থানে বসবাস করছে ৩ পরিবার

News Desk

‘১৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে এখন কিনছি ৪০ টাকায়’

News Desk

দেশের মাটিতে বিদেশি ফল, প্রথমবারেই সফল

News Desk

Leave a Comment