ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলার ১৫ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে ঝড়ের প্রভাবে এসব জেলার ২৬ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। দেশের ১৬ জেলার ৮২ উপজেলা এবং ১৩ পৌরসভায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাব পড়ে। আর ঝড়ে মারা গেছেন ৯ জন। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুর্যোগ কবলিত জেলা ও উপজেলা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালীতে দুই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ১০০টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। পটুয়াখালীর আট উপজেলার পাঁচ লাখ ৫৯ হাজার ৩৬৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ জেলায় চার হাজার ২০৯টি বাড়িঘর আংশিক এবং ৪৮৪টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।
এছাড়া পিরোজপুরে এক লাখ আট হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঝিনাইদহে ৯৪টি বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইয়াসে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা জেলায়। এই জেলায় ৯৪ হাজার ৮৫০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সাতক্ষীরার আশাশুনি, দেবহাটা, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর উপজেলার পৌনে ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে গেছে। এছাড়াও ছয় হাজার ৭৩৮ হেক্টর মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাগেরহাট জেলায় ২৪ হাজার ৯১৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে ৬৯০টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। বরগুনায় বিভিন্ন উপজেলার ১৭ হাজার ৩২০ জন মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই জেলায় এক হাজার ৮০০টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ভোলায় সাত হাজার ৭৩০টি ঘরবাড়ি আংশিক এবং তিন হাজার ৫৭৯টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। কক্সবাজারে ২০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুই হাজার ৪৭০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেনীতে ২০০ বাড়িঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝালকাঠির এক লাখ ৪৯ হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ৫০টি। খুলনার চার উপজেলায় দুই হাজার ২৪০টি ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার মানুষ।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরে ২২ হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, বরিশালের ১০ উপজেলা এবং ছয় পৌরসভার এক লাখ ২৭ হাজার ১৬২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বরিশালে এক হাজার ২০০ ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ভোলার বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন, মনপুরায় প্রভাবে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ২৬০ জন মানুষ। এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন থেকে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের সব ডিপার্টমেন্ট মিলে ডি-ফরমে চূড়ান্ত হিসাব পাঠাবে। সেই হিসাবটাই মূলত বিবেচনায় নেওয়া হবে।