ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে ১৩২টি কেন্দ্রে রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটাররা বিচ্ছিন্নভাবে আসতে শুরু করেছেন। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল অনেকটাই কম।
এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকালে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং যাত্রাপুর দারুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র এবং সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন।
আশুগঞ্জ যাত্রাপুর দারুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট প্রদান করে ভোটার হাজি ফরিদ মিয়া বলেন, অনেক নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। তবে এখানে ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিয়েছি।
আরেক ভোটার শফিকুল ইসলাম, জানান, ভোটকেন্দ্রে নীরব পরিবেশ ছিল। ভালো লেগেছে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।
সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন নারী ভোটার রেনু বেগম। তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ভালো। কোথাও কোনেও ধরনের সমস্যা হয়নি। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।
তবে এই কেন্দ্রে আসা নারী ভোটার শান্তি দাস (৮৬) জানান, তার ছেলের বউ পার্বতি দাসকে নিয়ে এসেছেন। তবে এনআইডি থাকলেও ভোটার নম্বর জানা না থাকায় দুই ঘণ্টা কেন্দ্র বসে ভোট না দিয়েই ফিরে যান।
এদিকে, যাত্রাপুর দারুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ৮টায় নিজের ভোট দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
অপরদিকে, সরাইল কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। এ সময় তিনি জানান, ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ভালো। স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের মধ্যদিয়ে তিনি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।
অপরদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। তবে কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটাররা এসে এক ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এতে অনেক ভোটার ভোট না দিয়েই ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, এবার ব্যালটে ভোট হচ্ছে। ভোটাররা সবাই ন্যাশনাল আইডি কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন। তারা তাদের ভোটার নম্বর জানেন না- সে ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে এ বিষয় গুলো সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক শাহগীর আলম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে এই আসনের ১৭ ইউনিয়নে ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুই জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব, বিজিবিকে রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার সদস্যরা রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, এই আসনের উপনির্বাচনে মোট পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ১০ হাজার ১১২ জন।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। ৪ অক্টোবর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।