চড়ক পূজা ও মেলায় উপচে পড়া ভিড়, সবার মঙ্গল কামনা
বাংলাদেশ

চড়ক পূজা ও মেলায় উপচে পড়া ভিড়, সবার মঙ্গল কামনা

করোনা মহামারির কারণে টানা দুই বছর হয়নি গ্রামীণ মেলা। এখন কমেছে করোনার সংক্রমণ, স্বাভাবিক হয়েছে সবকিছু। তাই দুই বছর পর আনন্দের সীমা নেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। আয়োজন করা হয়েছে চড়ক পূজা ও মেলার। চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পা ফেলার জায়গা ছিল না। ঢাকঢোল বাজনার সঙ্গে উলুধ্বনি। হাত জোড় করে ভগবানের কাছে মঙ্গল কামনা করেছেন সবাই।

দিনাজপুরের শেখপুরা ইউনিয়নের উত্তর গোপালপুর এলাকার দুর্গা শিব মন্দিরের পাশের মাঠে চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলায় এ দৃশ্য দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার এ মেলা ও পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যার আগে চড়ক ঘোরানো হয়। এর আগে চড়ক পূজা করা হয়। পূজার পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালী, শীতলা এবং বুড়ি দেবীর পূজা করা হয়। এর মধ্যে কালী পূজা করেন তিন জন ব্রাহ্মণ। একজন ব্রাহ্মণের সহায়ক শীতলা এবং বুড়ি পূজা করেন। একইসঙ্গে যার পিঠ ফুটো করে চড়কে ঘোরানো হয় তার পূজাও করা হয়। এবার শম্ভু রায় নামে এক ব্যক্তির পিঠ ফুটিয়ে চড়কে ঘোরানো হয়।

চড়ক পূজাকে কেন্দ্র করে ওই স্থানে গ্রামীণ মেলা বসে। শুধু স্থানীয়রা নয়, জেলা ও আশপাশের উপজেলা থেকেও লোকজন এসেছেন এই মেলায়।

মেলায় আগত রতন রায় বলেন, আমি এই মেলা দেখে আসছি ছোটবেলা থেকেই। গত দুই বছর মেলা হয়নি। এবার হওয়ায় ভালোই লাগছে। পরিবার নিয়ে এসেছি, ভগবানের কাছে প্রার্থনা সবাইকে ভালো রাখুন। মহামারি থেকে দূরে রাখুন।

মেলায় আসা প্রদীপ কুমার বলেন, দুই বছর পর মেলায় এসে ভালো লাগছে। আবারও সেই পুরাতন ভিড়, মেলায় জিলাপি খাওয়া। মজাটাই আলাদা।

ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা আগে হতো কোনপাড়া এলাকায়। সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে গোপালপুর দুর্গা শিব মন্দির পূজা উদযাপন কমিটি এখানে মেলার আয়োজন করছে। তবে কবে থেকে এই মেলা হয়ে আসছে তা বলতে পারেননি আয়োজক ও স্থানীয়রা।

তারা জানিয়েছেন, শত শত বছর ধরেই এই মেলা হয়ে আসছে। তবে দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। চড়ক পূজা ও মেলায় উপচে পড়া ভিড়, সবার মঙ্গল কামনা

গোপালপুর দুর্গা শিব মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অজিৎ অধিকারী বলেন, ভালোভাবেই পূজা ও মেলার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। অনেক পুরাতন এই মেলা। আমার দাদুও (ঠাকুর দাদা) বলতে পারেন না কবে থেকে এই মেলা হয়ে আসছে। করোনার কারণে গত দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল। এবার আয়োজন করতে পেরে ভালো লাগছে আমাদের।

গোপালপুর দুর্গা শিব মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির নির্বাহী সদস্য মিহির রায় বলেন, চৈত্র সংক্রান্তির দিনে এই মেলা হয়। এর আগে চড়ক পূজা, কালী পূজা, শীতলা পূজা ও মুড়ি মায়ের পূজা করা হয়। অনেক পুরাতন রীতি এটি। পঞ্জিকাতেও এই পূজার বর্ণনা আছে। তাই আমরা এটি উদযাপন করি।

শুধু গোপালপুর মাঠেই নয়, এই দিনে জেলা সদরের বিদ্যাশ্বরী এলাকাতেও চড়ক ঘোরানো ও চড়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চড়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে চিরিরবন্দর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

Source link

Related posts

‘হাতে অস্ত্র থাকলেই গুলি করা যাবে না, এগুলো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা’

News Desk

‘ভালো উইকেটে খেললে অবশ্যই বড় দলের বিপক্ষে ব্যর্থ হবেন’

News Desk

উদ্বোধনের ১৩ মাসেও চালু হয়নি রংপুরের শিশু হাসপাতাল

News Desk

Leave a Comment