রাজবাড়ীতে ভয়াবহ আকারে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দেখা যায়, ২০ শয্যার এ হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৫২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ওয়ার্ডে সিট না থাকায় অনেক বেডে দুজন করে রোগী রাখা হয়েছে। এমনকি হাসাপাতালের মেঝেতেও দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় হাসপাতালে পাশের ময়লার ড্রেনের পাশে গাছের নিচেও রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি রোগী ছাড়াও চলতি মাসে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
রাজবাড়ী পৌরসভা এলাকার কুলসুম বেগম ডায়রিয়া আক্রান্ত ছেলে কাওসার মাহমুদকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ ডায়রিয়া বেড়ে গেছে। হাসপাতালে সিট না থাকায় বাইরে রোগীরা বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলা শহরে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া রোগীর জন্য মাত্র ২০টা সিট দিয়ে কীভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব? সিট আরও বেশি দরকার। আমার ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’
হাসপাতালে ময়লা ড্রেনের পাশে চিকিৎসা নেওয়া রোকসানা আক্তারের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সোমবার সকালে হাসপাতালের মধ্যে কোনও সিট ও জায়গা না পাওয়ায় বাইরে নোংরা পরিবেশে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। গত দুই দিন ধরে আমার স্ত্রীর ডায়রিয়া ও বমি হচ্ছে। যে পরিবেশে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছি তাতে মনে হয় ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে। তারপর আবার সময়মতো ডাক্তার পাচ্ছি না।’
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহিম টিটন বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে সবাইকে খাওয়া-দাওয়াসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে আমরা চিন্তাভাবনা শুরু করেছি। দ্রুত ডায়রিয়াজনিত রোগীর জন্য আলাদা একটি ওয়ার্ড বরাদ্দ দেওয়া হবে।’