টাঙ্গাইলে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ মামলা, বিএনপি নেতা বললেন ‘আমরা আন্দোলনে যাইনি’
বাংলাদেশ

টাঙ্গাইলে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ মামলা, বিএনপি নেতা বললেন ‘আমরা আন্দোলনে যাইনি’

টাঙ্গাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি ও ছাত্রদলসহ ৪২৭ ব্যক্তির নাম উল্লেখসহ আসামি করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় ১৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীও রয়েছেন।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরসহ কয়েকটি ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, মধুপুর ও ধনবাড়ী থানায় ১০ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বাদী হয়েছেন পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক নেতা। মামলায় ৪২৭ জনের নাম উল্লেখ করেছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও দুই হাজার ৮৫০ জনকে আসামি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়াও শহরের নিরালা মোড় এলাকায় পুলিশ বক্স ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর করে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় সদর থানার এসআই আরিফ রব্বানী বাদী হয়ে গত ১৯ জুলাই রাতে অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়াও গত ১৮ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক খোরশেদ আলম ২০ জুলাই অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। ২৩ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হাসান বাদী ৯২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সদর থানায়।

গত ১৯ জুলাই দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আশরাফ উল্লাহ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করে কালিহাতী থানায় গত ২১ জুলাই মামলা করেন। এ ছাড়াও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে কালিহাতী থানার এসআই ইমাম হোসেন বাদী হয়ে সাত জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০০ জনের বিরুদ্ধে গত ১৯ জুলাই মামলা করেন। সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে গত ১৯ জুলাই এসআই মো. ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে ৭৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মধুপুর থানায় মামলা করেন।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কেয়ারটেকার জামাল হোসেন বাদী হয়ে ৯৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে গত ২০ জুলাই মধুপুর থানায় মামলা করেন। একই দিন শ্রমিক অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে শ্রমিক নেতা মনছের আলী বাদী হয়ে ১০৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়াও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ১৯ জুলাই ধনবাড়ী থানার এসআই জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

এদিকে, সচেতন মহলের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা না হয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমরা নৈতিকভাবে সমর্থন করেছি। আমরা কোনও আন্দোলনে যাইনি। চারটি থানায় আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখসহ প্রায় চার হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন থানায় পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৬৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা ছাড়াও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া রয়েছে।’

অপরদিকে, বিভিন্ন থানায় জামায়াতের আমিরসহ পাঁচ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন বলে দাবি করেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৮৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Source link

Related posts

পরিবারের কাছে ফিরলেন বৃষ্টি,পুলিশের মাধ্যমে

News Desk

বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি: ঢাকায় শাকসবজি পাঠাতে বেড়েছে খরচ

News Desk

৭ বছর পর সম্মেলন, সিরাজগঞ্জে উজ্জীবিত আ.লীগ নেতাকর্মীরা

News Desk

Leave a Comment