Image default
বাংলাদেশ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৮ লেন হচ্ছে, লাগবে ৭৩ হাজার কোটি টাকা

দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ‘লাইফলাইন’খ্যাত ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীত করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে মহাসড়কটি প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অবশ্য পুরো মহাসড়ক আট লেন হবে না। যানবাহনের চাপের ওপর ভিত্তি করে কোথাও ছয় লেন, কোথাও আট লেন হবে। এ–সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত নকশা ও সমীক্ষার কাজ আগামী মার্চে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

মহাসড়কটি প্রশস্ত করতে কত টাকা খরচ হতে পারে, তার একটি হিসাব দাঁড় করিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেটের দূরত্ব ২৩২ কিলোমিটার। মহাসড়কটি আট লেনে উন্নীত করতে খরচ হবে ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, আলাদা তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশস্ত করা হবে মহাসড়কটি। একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে বৃহত্তর ঢাকা অংশের তিনটি জেলায় (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ)। এ অংশে সড়কের দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার; যা বাস্তবায়নে খরচ হবে ৮ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। আরেকটি প্রকল্প হবে বৃহত্তর কুমিল্লা অংশের দুটি জেলায় (কুমিল্লা ও ফেনী)। এ অংশে সড়কের দৈর্ঘ্য ১২৫ কিলোমিটার। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৪৫ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। আরেকটি বাস্তবায়িত হবে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অংশে; যেটি হবে মূলত ফেনী থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত। এতে খরচ হবে ১৮ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। এই অংশের দৈর্ঘ্য ৬৯ কিলোমিটার।

তিনটি প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৭৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ঋণ চাওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকার জোগান দেবে। ২০২৪ সালে শুরু হয়ে ২০২৯ সালে সড়ক প্রশস্তের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকটে প্রকল্পের পুরো টাকা সরকারি কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে। অর্থায়নে উন্নয়ন সহযোগীদের অনুরোধ জানাতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তিনটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

মহাসড়কটি আট লেনে উন্নীত করতে কেন আলাদা তিনটি প্রকল্প নেওয়া হলো, জানতে কথা হয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ২৩২ কিলোমিটারের কাজ একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করলে খরচ পড়বে বেশি। তখন এত টাকা একসঙ্গে কোনো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ঋণ দিতে রাজি হবে না। প্রকল্পে জটিলতাও বাড়বে। সে কারণেই আলাদা তিনটি প্রকল্পের প্রস্তাব।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনটি প্রকল্প নেওয়ার কারণ, এত বড় প্রকল্প একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা কঠিন। তা ছাড়া, এত বিপুল পরিমাণ অর্থ একসঙ্গে কেউই দিতে রাজি হবে না। সে কারণে কাজ ভাগ করা হয়েছে।’

নিয়ম অনুযায়ী পরিকল্পনা কমিশন থেকে এখন তিনটি প্রকল্প অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠানো হবে। কোন কোন দেশ ও সংস্থা এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করবে তা খোঁজ করবে ইআরডি। অবশ্য তিনটি প্রকল্প এখনো ইআরডিতে পাঠায়নি কমিশন।

Related posts

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি

News Desk

১০ হাজার ইয়াবাসহ ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা আটক

News Desk

ডিপোতে বিস্ফোরণের পর নড়েচড়ে বসেছে ৩ অধিদফতর

News Desk

Leave a Comment