দুর্নীতির মামলায় নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ ১১ জনকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যশোরের স্পেশাল জেলা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় এ রায় দেন।
দণ্ড পাওয়া অপর ব্যক্তিরা হলেন নড়াইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খন্দকার আল মনসুর বিল্লাহ, আহম্মদ আলী খান, তেলায়েত হোসেন, ইজারাদার রফিকুল ইসলাম, রাধে কুণ্ডু, ইজাজুল হাসান, জিল্লুর রহমান, এইচ এম সোহেল রানা, তৎকালীন পৌরসচিব শফিকুল আলম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান। ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি আদালত তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও তা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন। নড়াইলের রূপগঞ্জ হাট ও বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে ১২ লাখ ২২ হাজার ৮০ টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালত এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজুল ইসলাম। দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ আটজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বাকি তিনজন পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, বাংলা ১৪১২ সনে নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ সাধারণ হাট ও নড়াইল বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে ৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা ও ১৪১১ সনে একই হাট ইজারা দিয়ে ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা আদায় করেন পৌর মেয়র সোহরাব হোসেন ও কাউন্সিলররা। কিন্তু ওই টাকা তাঁরা পৌরসভায় জমা না দিয়ে ইজারাদারদের সহযোগিতায় আত্মসাৎ করেন। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী। তদন্ত শেষে তিনি পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, প্রকৌশলী, সচিবসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য স্পেশাল জেলা জজ আদালতে পাঠানো হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
একই সঙ্গে আদালত আত্মসাৎ করা ১২ লাখ ২২ হাজার ৮০ টাকার মধ্যে আসামি জিল্লুর রহমানকে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬০ টাকা, সোহেল রানাকে ৩ লাখ ৫২ হাজার ১২০ টাকা, রাধে কুণ্ডুকে ৩ লাখ ৫০ হাজার, রফিকুল ইসলামকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ইজাজুল হাসানকে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে দুদকের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, রায় ঘোষণার সময় সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ আটজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামিদের মধ্যে তিনজন পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার পর সন্ধ্যায় তাঁদের কারাগারে নেওয়া হয়।
এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী মোস্তফা হুমায়ুন কবীর।