অনেক চেষ্টা করেও আগুন থেকে নিজের পাঠ্যবই রক্ষা করতে পারেনি সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার স্মৃতি। আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খুঁজছে সে তার প্রিয় বই-খাতার পোড়া অংশ। সোনার গহনা হারিয়ে গেলেও তার বেশি কষ্ট হচ্ছে বইয়ের জন্য।
স্মৃতি রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তির বাসিন্দা। মা-বাবা ও দুই ভাইবোনের সঙ্গে বস্তির একটি ঘরে থাকত শহিদুল ইসলামের পরিবার। তার পরিবার চলে হকারের ব্যবসা করে। গতকাল রোববার পড়াশোনা শেষে বইগুলো যত্ন করে গুছিয়ে রেখে রাত ১০টায় ঘুমিয়ে পড়েছিল স্মৃতি।
সোমবার (৭ জুন) ভোররাত ৪টার দিকে আগুনের লেলিহান শিখা প্রথম চোখে পড়ে স্মৃতির বাবা শহীদুল ইসলামের। পরে তিনি স্মৃতিকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সবার সঙ্গে রাস্তায় যায় স্মৃতি। চোখের তাদের ঘর পুড়ছে। স্মৃতির তখন মনে পড়ে তার পড়ার বইয়ের কথা। অনেক চেষ্টা করেও জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে থেকে পড়ার বই-খাতা উদ্ধার করতে পারেনি সে।
ফাতেমা আক্তার স্মৃতির সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। বর্তমানে মহাখালী আমতলী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। গত কয়েক মাস আগে গলা ও কানের সোনার গহনা বানিয়েছিল। তার সঙ্গে শখ করে রুপার পায়ের নূপুরও তৈরি করেছিল। সেসব গহনা পরে স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখত সে।
আগুনে তার সব স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে। গহনার চেয়ে অধিক প্রিয় ছিল তার পড়ার বই। গহনা হারিয়ে তেমন কষ্ট না পেলেও বইপত্র পুড়ে যাওয়ার কষ্ট সে ভুলতে পারছে না। পোড়া ঘরে দরদ নিয়ে সে নিজের বই-খাতা খুঁজে পাওয়ার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফাতেমা বলেন, সোনার জিনিস পুড়ে গেছে তাতে আমার কষ্ট হচ্ছে না, বই-খাতা পুড়ে যাওয়ায় আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি কীভাবে পড়াশোনা করবো- এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে।