চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাদকসংক্রান্ত স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন।
ওই শিক্ষার্থীর নাম গোলাম রব্বানী। তিনি চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক।
গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে আমার টাইমলাইন থেকে মাদক নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক আইদিদ আলমের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জনের একটি দল আমাকে গোলচত্বর থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরঘাটে নিয়ে প্রথমেই আমার কাছ থেকে ফোন ও ব্যাগ কেড়ে নিয়ে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে আইদিদ আলম, ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ইমরান হাসান মুরাদ ও চতুর্থ বর্ষের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ নাহিয়ান আমাকে এলোপাতাড়ি থাপ্পড় মারেন। ঘটনাস্থলে চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকায় তাঁরা আমাকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন।’
রব্বানী আরও বলেন, ‘স্ট্যাটাসটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করলেও তাঁরা আমাকে ছাড় দেননি। একপর্যায়ে তাঁরা আমার গায়ে হাত তোলেন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়েট সাংবাদিক সমিতি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডোপ টেস্ট ও হামলাকারী তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানায়। এ ছাড়া জড়িত ব্যক্তিদের বহিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেয়।
আইদিদ আলম বলেন, গোলাম রব্বানীকে বড় কোনো আঘাত করা হয়নি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ক্ষুণ্ন করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী হিসেবে তাঁকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছেন।
ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে সেটি ছাত্রকল্যাণ দপ্তরকে জানালে আমরা সেটি খতিয়ে দেখব। কিন্তু গায়ে হাত তোলা ঠিক নয়।’
এ ব্যাপারে চুয়েট ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ ইমাম বাকের প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি।
জড়িত ব্যক্তিরা ছাত্রলীগের কোনো সক্রিয় কর্মী ছিলেন না। এ ধরনের কার্যক্রমের দায়ভার সংগঠন কখনো নেবে না। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা গ্রহণ করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি সমাধানের জন্য ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অবহিত করেছি। তিনি অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’