ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার পক্ষে যেসব গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার হবে। এরই মধ্যে কয়েকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছেন। এ ছাড়া তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।’শনিবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সৈয়দপুর বিমানবন্দর নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পরে তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি রাজপথে পরাজিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেক গুজব রটাচ্ছে। ফেক আইডি দিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তারা অনলাইনে তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে।’ তিনি জনগণকে তাদের মিথ্যা তথ্য ও গুজবে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানান।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সহযোদ্ধা শহীদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনি লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। রক্ত দিয়েছেন। সেই রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা ভোগ করছি। আবু সাঈদ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। আমরা আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যার সমাধানে সব সময় পাশে থাকবো। আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই অবহেলিত থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে আছি। সেই দায়িত্বের জায়গা থেকে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আজকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আমন্ত্রিত হয়ে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছি। আজকের এই দিনে গভীরভাবে স্মরণ করছি শহীদ আবু সাঈদকে। স্মরণ করছি, জুলাই বিপ্লবের সব শহীদ ও আহতদের।
‘আমরা এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শপথ নিতে চাই– আবু সাঈদরা যে কারণে শহীদ হয়েছেন, গণঅভুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তারা ধারণ করেছিলেন, সেটি ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আবু সাঈদকে পুরো বাংলার ছাত্রসমাজ অগ্রসৈনিক হিসেবে সব সময় স্মরণ করবে।’
এর আগে বেরোবির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন গেট উদ্বোধন করেন তথ্য উপদেষ্টা। এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনন্দ র্যালিতে অংশ নেন তিনি। পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় আবু সাইদের বাবা মকবুল হোসেন সভা মঞ্চে পৌঁছালে তথ্য উপদেষ্টা তার জন্য নির্ধারিত চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যান। নিজের চেয়ার আবু সাঈদের বাবাকে ছেড়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। পরে তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলীসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।